সিটিনিউজবিডিঃ জমি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেখানেও কথা-কাটাকাটি হলে একটি পক্ষ গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে গেলে এক তরুণকে বুকে গুলি করলে তাঁর মৃত্যু হয়। গত শনিবার রাতে ময়মনসিংহ শহরতলিতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণের নাম ফিরোজ সরকার ওরফে শিমুল (২৮)। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের গাড়ি চালাতেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ শহরের কেওয়াটখালী এলাকায়। ওই ঘটনায় আয়াছ বিন মাহমুদ ওরফে সোহান (২২) নামের আরেকজন গুলিবিদ্ধ ও রীনা আক্তার (৩০) নামের অন্য এক নারী আহত হন। দুজনই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
পুলিশ, নিহত ব্যক্তির স্বজন, গুলিবিদ্ধ তরুণ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরতলির দিঘারকান্দা কাদুরবাড়ির এলাকার দুই ভাই হুমায়ুন কবীর ওরফে ভুট্টু ও নুরুল কবীরের সঙ্গে তাঁদের দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই রনির জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জের ধরে শনিবার রাত আটটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে দিঘারকান্দা এলাকায় রনির সঙ্গে হুমায়ুন ও নুরুলের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ঘটনা মীমাংসার জন্য রনির পরিবারের কয়েকজন হুমায়ুনকে মুঠোফোনে প্রস্তাব দেয়। হুমায়ুন ও নুরুল প্রস্তাবে রাজি হন। রাত ১১টার দিকে রনির পক্ষের হয়ে ওই পরিবারের কয়েকজন কাদুরবাড়ি এলাকায় হুমায়ুনদের বাড়ির সামনে যায়।
তবে আবারও হুমায়ুন ও নুরুলের পক্ষের লোকদের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে হুমায়ুন ও নুরুলের পক্ষের বেশ কয়েজন প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এ সময় পাশের গ্যারেজে গাড়ি মেরামত করানোর কাজে ছিলেন ফিরোজ সরকার। তিনি পরিস্থিতি শান্ত করতে এগিয়ে গেলে তাঁকে প্রতিপক্ষ ভেবে বুকে গুলি করা হয়। ফিরোজকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
আয়াছ বিন মাহমুদ গতকাল রোববার সকালে বলেন, ‘যাঁরা গুলি করেছেন, তাঁরা সম্পর্কে আমার মামা। তাঁরা এলাকায় সব সময় ত্রাসের সৃষ্টি করেন। আমি বিরোধের মীমাংসা করতে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে ছিলাম। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে তিনটি রিভলবার থেকে একের পর এক গুলি করা হয়। নিহত ব্যক্তি প্রতিবেশী হওয়ায় তাঁকে আমি চিনি। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না।’ গতকাল বেলা ১১টার দিকে হুমায়ুন কবীরদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে পুলিশ। তবে বাড়ির ভেতর থেকে কারও সাড়া পাওয়া যায়নি। রনিকেও খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা করছে।