চকরিয়ায় ৫৬ দোকান অগ্নিকান্ডে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

0

চকরিয়া প্রতিনিধি :  কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫৬টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাত আড়াইটার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে ১৯টি মুদির দোকান, ৫টি মুরগীর দোকান, ২টি মোবাইলের দোকান, ৫টি মাছ দোকান, ২টি চায়ের দোকান, ২৩টি সবজি দোকান ও নগদ টাকাসহ প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিভাতে গিয়ে ছয় সাত জন ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে কিভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারে নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে ,৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভোররাতে আড়াইটার দিকে মালুমঘাট কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নিয়ন্ত্রণাধীন টিনশেড বাজারে আকস্মিক অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। এতে মুহুর্ত্বের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় অন্তত ৫৬টি দোকান পুড়ে যায়। পরে চকরিয়ার ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম তিনটার দিকে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দেড়ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্থ মাছ ব্যবসায়ী আহমদ কবির বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৪৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আমি ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু আকস্মিক এই অগ্নিকান্ডে আমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।
ক্ষতিগ্রস্থ মুদি দোকান ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দিন বলেন, আমার নগদ ৫৫ হাজার টাকাসহ সাড়ে ৪ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ।
অপর ব্যবসায়ী কামাল সওদাগর বলেন, অগ্নিকান্ডে আমার নগদ টাকাসহ অন্তত সাড়ে ৪ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বর্তমানে এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় কি কারণে অগ্নিকান্ডে ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তপূর্বক দোষীদের শা¯ির— দাবী জানান তারা।
মালুমঘাট কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আহমদ কবির বলেন, রাতের আধাঁরে কাঁচাবাজারটি দখল করতে প্রতিপক্ষের লোকজন বাজারে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে। তবে তদন্ত করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জি.এম মহিউদ্দিন বলেন, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছি এবং প্রায় ১.৩০ ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। এ ঘটনায় অন্তত ৫৬টি দোকান পুড়ে দেড় কোটি টাকার মতো ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্টসাকির্ট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটতে পারে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.জহিরুল ইসলাম খান বলেন, কি কারণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলা যাচ্ছে না। দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনায় একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। তবে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারে ক্ষতিগ্রস্থ দোকানগুলো পুন:নির্মাণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, সকাল ১১টার দিকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.জহিরুল ইসলাম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অগ্নিকান্ডে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ সরেজমিন নিরুপন করতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.