কুতুবজোম ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা হবে নৌকা ও ধানের শীষেরঃ

জামাল জাহেদ, কক্সবাজার :  মহেশখালি অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে বর্তমান দেশের বড় দুদল দুশ্চিন্তায় ও নানা বিতর্কিত হলেও কুতুবজোম ইউনিয়নে সহজে গ্রহনযোগ্য একককপ্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা। নির্বাচনের জন্য একক প্রার্থী বাছাই কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জন্য।

বিভিন্ন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা মৌখিকভাবে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা দিয়েও কুল কিনারা পায়নি কিন্তু প্রাথমিকভাবে একক প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা তাদের। সারা মহেশখালিতে তৃণমূলের বিভিন্ন ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক ইউনিয়নে দুই থেকে পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য জোর প্রস্তুতি নিয়েও পপিছু হটেছে,ইতিমধ্যে তারা মাঠেও নেমেছেন দলীয় প্রার্থীর প্রচারে। এমন পরিস্থিতিতে একক প্রার্থী বাছাইয়ে,দুদলের যেমন কঠিন ছিলো,তেমনি বহিষ্কার বা কঠোর সিদ্ধান্তের ভয়ে তৃণমূলে বিশৃঙ্খল দ্বন্দ্ব কোন্দলের আশঙ্কা করছেন তৃণমূলের নেতারা। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আচরণবিধি কার্যকরের কথা থাকলেও আশংকায় পড়েছে ইতিমধ্যে বড় বড় শোডাউনে তেমন কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রশাসন।

এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন হচ্ছে, ইউনিয়ন পরিষদে।কুতুবজোম ইউনিয়নে প্রথম পর্যায়ে বিএনপি দলীয় থেকে ছাত্রদলের খোরশেদকে প্রার্থী হিসাবে প্রচার করলেও শেষ পর্যন্ত চেয়ারম্যান শফিউল আলমকে বিএনপি প্রার্থী হিসাবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে।অপরদিকে ক্ষমতাসীন আঃলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন খোকনকে তৃনমুল পর্যায়ে বেশজনপ্রিয় ভঙ্গিতে ৯টি ওয়ার্ডে ব্যাপক গ্রহন যোগ্যতা দেখা যাচ্ছে।স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়,তরুন নেতৃত্বগুণ ও ব্যক্তিগত ক্লীন ইমেজে জনসাধারণের কাছে,তার বাবা সাবেক সফল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কবির আহমদের জনপ্রিয়তা ও যোগ হওয়াতে সোনায় সোহাগা বলে জানা যায়।দলীয় প্রার্থী হিসাবে খোকন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামায় একক প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়নি বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা। তারা বলছেন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে,এবারে কুতুবজোম সিংহাসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত।কুতুবজোম ইউপি প্রতিষ্টা হলে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন,আওয়ামীলীগের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন।পরবর্তীতে জাতীয়পার্টির জেলা সভাপতি কুতুবজোমের দায়িত্ব নিলেও গতবারে বিএনপ দলীয় প্রার্থীর হাতে ছিলো কুতুবজোমের উন্নয়ন।সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুলে জনগন এবারে নতুন তারন্যের জয় দেখতে চান বলে জানান।

একই সঙ্গে অধিক সংখ্যক প্রার্থী না থাকায় তৃণমূলে বিদ্রোহ, সংঘাত ও সংঘর্ষের আশঙ্কাও কমে গেছে ২২তারিখের নির্বাচনে।কুতুবজোম ইউনিয়নে ৩২হাজার জনগনের প্রায় ১৯হাজার ভোট যুদ্ধে কেহ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি প্রার্থী শফিউল আলমের এক কাছের আত্বীয় তার মনোভাব ব্যক্ত করেন।তিনি আরো জানান,যে যাই বলুক ব্যক্তি নয় আসল খেলা হবে নৌকা আর ধানের শীষের,নয়তো বিএনপি আর আওয়ামীলীগের । খোন্দকারপাড়ার এক সাবেক মেম্বার জানান,স্থানীয় নির্বাচনে আমরা দলীয় ভাবকে প্রাধান্য দেইনা,কারন জনগন ও এ বিষয়ে ভোট দিতে অভ্যস্ত নয়,তারা ব্যক্তিকে টার্গেট করে ভোট দেয়।যার হাতে কুতুবজোম ইউনিয়নের উন্নয়ন হবে বলে মনে করেন থাকেই আমরা রায় প্রদান করবো।ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রায় মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেক নেতারা খোকনের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন বলে দলীয় সুত্রে নিশ্চিত করেন। ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে জনগন দুপ্রার্থীর প্রচারে খুব সায় দিচ্ছেন তবে জনগনও ভিন্ন কৌশলে এগুচ্ছে বলে জানা যায়,রাজনীতিক নেতারা গোল টেবিলে বসে চক বসিয়ে ভোটের হিসাব করলেও,জনগন তা হিসাব করে বাজারে চায়ের দোকানে চুমুকে চুমুকে আড্ডায়।জনগনও সহজে ধরা দিচ্ছেনা যেহেতু ভোটের সময় এখনো ২৩দিন মতো বাকি।তারা বলছেন এত বেশি সংখ্যক প্রার্থী না হওয়ায়,মধ্যে যুগল প্রার্থী বাছাই করা তাদের জন্য কঠিন হবে। এক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডঃ সিরাজুল মোস্তফা জানিয়েছেন,দলীয় প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত করতে সকল মাঠপর্যারের নেতাকর্মীদের কাজ করতে।আঃলীগ বিএনপি দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দল থেকে মনোনয়ন পাবার বিষয়ে তারা ও শতভাগ আশাবাদী ছিলেন কিন্তু মাঠপর্যায়ে জরিপ করে হয়তো,দল তাদের যোগ্য মনে করেছে।আবার তাদের অনেকেই বলছেন, দীর্ঘ দিন লড়াই-সংগ্রাম করে তারা এলাকায় যার যার অবস্থান তৈরি করেছেন। অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় তুমুল জনপ্রিয়। তাই নির্বাচন করে তারা নিজেদের ও দলের অবস্থান আরও সুসংহত ও জনপ্রতিনিধি হয়ে জনগণের সেবা করতে চেয়েছিলেন তবে, মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, কেন্দ্র থেকে যেহেতু প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের পক্ষেই তারা কাজ করবেন।

সাবেক ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আব্দুল মন্নান জানান, একজন সফল সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে ও আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা হিসেবে তারণ্যের প্রতীক আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন খোকন যোগ্যপ্রার্থী এবারের নির্বাচনী মাঠে,সকলকে যেনো তার জয় নিশ্চিত করে।ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদতদাতাদের বিষয়ে,গত ৩০শে জানুয়ারি নোয়াখালীতে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের কেউ বিদ্রোহী হলে,বা গোপনে বিরোদীদলের হয়ে কাজ করলে তাকে পরিষ্কারভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। দলের শীর্ষ নেতাদের এ ধরনের মনোভাবেও দুশ্চিন্তায় রয়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা। তারা মনে করেন, তৃণমূল নেতারাই আওয়ামী লীগের প্রাণ ভ্রমরা। যারা বিদ্রোহী হবে তারাও দলের নিবেদিত নেতাকর্মী। তাই কেন্দ্র থেকে কঠোর অবস্থান নেয়া হলে ভবিষ্যতে তৃণমূলের রাজনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

নির্বাচনী জরিপে আমাদের প্রতিবেদন সবকটি ওয়ার্ডের ভোটারের সাথে কথা বলে জেনেছেন,এলাকার মানুষ কুতুবজোমে প্রতীক নয় ব্যক্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছে সকলের মুখে খোকনের নাম, তবে জনগন যদি সত্যিকার অর্থে দলীয় মনোভাবে প্রার্থীদের ভোট দেয় হিসাব হবে উল্টো।তবে অন্যদিকে এই মুহুর্তে কুতুবজোমে বিএনপি সমর্থক অসহায় ও মহাশক্তিধর জনপ্রিয়তা প্রশ্নে খোকন তুঙ্গে বলে জানা যায়।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.