উ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সম্প্রতি পরমাণু পরীক্ষা ও রকেট উৎক্ষেপণের জবাবে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন ও আরো কঠোর  নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

বুধবার ওই প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণের আগে পিয়ংইয়ংয়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে স্বীকৃত বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের ব্যাপক দেনদরবার হয়। শেষ পর্যন্ত নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ওই প্রস্তাবে সম্মত হয় চীন। গত মাসে নতুন পরমাণু পরীক্ষা চালানোর পরপরই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ  করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বুধবার তা চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। ওই নিষেধাজ্ঞায় ফলে দেশটির মালবাহী জাহাজগুলোতে তল্লাশি চালান হবে।

প্রস্তবটি গৃহীত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে বলেছেন,‘আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একই কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছে। তারা পিয়ংইয়ংকে এই বার্তা দিয়েছে যে, তাদের বিপজ্জনক কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে দেশের জনগণের জন্য একটি সেরা পথ বেছে নিতে হবে।’

এদিকে বুধবার ভোটের পর নতুন ওই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার বলেছেন, নতুন এই নিষেধাজ্ঞা জাতিসংঘের পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলোর তুলনায় অনেক কঠোর এবং উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও অন্যান্য নিষিদ্ধ অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই এটি  গৃহীত হয়েছে।

সামান্থা পাওয়ার জোর দিয়ে বলেছেন,‘উত্তর কোরিয়াকে তার ধ্বংসাত্মক অস্থিতিশীল কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতেই আমরা নতুন এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হয়েছি। এশিয়ার ওই দেশটির বিরুদ্ধে এর আগে নিরাপত্তা পরিষদ যে চারটি অবরোধ আরোপ করেছিল নতুন নিষেধাজ্ঞাটিকে তাদের চাইতেও কঠোর বলে উল্লেখ করেছেন পাওয়ার।

নিষেধাজ্ঞার উল্লেখযোগ্য পয়েন্টগুলো হচ্ছে:
১.জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো উত্তর কোরিয়া থেকে আসা এবং দেশটির দিকে যাওয়া সকল কার্গো পরীক্ষা।
২.উত্তর কোরিয়ার কোনও জাহাজ অবৈধ পণ্য বহন করছে বলে সন্দেহ হলে বিশ্বব্যাপী যেকোনও বন্দর থেকে তা ফিরিয়ে দেওয়া।
৩. উত্তর কোরিয়ায় কয়লা, লোহা ও লোহা আকরিক রপ্তানি নিষিদ্ধ করা। কেননা এইসব পদার্থ পরমাণু বা ব্রালেস্টিক পরমাণু কর্মসূচির কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাক্
৪. দেশটিতে সকল ধরনের সোনা, টাইটানিক আকরিক, ভেনাডিয়াম আকরিকসহ  সকল ধরনের মূল্যবান ধাতুর রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
৫.কেরোসিনসহ বিমানের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় এমন সব পদার্থের রপ্তানি নিষিদ্ধ।
৬. উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে প্রশিক্ষণসহ যে কোনো ধরনের সামরিক সহযোগিতা নিষিদ্ধ। বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের চলমান সামরিক প্রশিক্ষণ।
৭. ঘড়ি, স্নোমোবইল ও খেলার সরঞ্জমাদিসহ সব ধরনের বিলাসি পণ্যের ওপর নিষাধাজ্ঞা
৮. বিভিন্ন দেশে থাকা উত্তর কোরিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.