মিরসরাইয়ে আফসারুল আমীনের বহিষ্কারের দাবীতে চলছে আন্দোলন

এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই : গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির সাথে চট্টগ্রামের একটি মতবিনিময় সভায় সাংসদ ডা. আফসারুল আমীনের অশোভন আচরণের জেরে দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল মিরসরাইয়ে আফসারুল আমীনের বহিষ্কারের দাবীতে হয়েছে তীব্র আন্দোলন। হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ। এখন এই আন্দোলনকে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো মিরসরাইয়ের ক্ষমতাসীনদলের নেতাকর্মীরা। শীঘ্রই সাংসদ আফসারুল আমীন মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের কাছে ক্ষমা না চাইলে আরো ভয়াবহ আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে ঘোষণা করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন স্পটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে।

সর্বশেষ সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এসময় ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফরিদুল হাসান নয়নের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল কামাল মিঠুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরিদুল হাসান টিপু, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল কবির ফিরোজ, মিরসরাই পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাখের ইসলাম রাজু, মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মাইনুর ইসলাম রানা, সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী, আ’লীগ নেতা এটিএম আলমগীর হোসেন, সোহরাব হোসেন, ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলা উদ্দিন, নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আরিয়ান, ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদুল ইসলাম রুপম প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে আফসারুল আমীনের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

এরআগে সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় উপজেলার খৈয়াচড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারে খৈয়াছরা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। পরে পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরীর নেতৃত্বে ডা. আফসারুল আমিনের সংসদ সদস্য পদ বাতিলের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহম্মেদ সুমনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেয় তারা। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে পৃথক আরো একটি স্মারকলিপি দলীয় সভানেত্রী ও সাধারন সম্পাদক বরাবর দেয় খৈয়াছরার জনগণ। এতে বলা হয় আফসারুল আমিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সাথে অশোভন আচরণ করে রাজনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্গন করেছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাঁকে দল থেকে বহিস্কার করা হোক। এছাড়া সোমবার বিকেলে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের উদ্যোগে জোরারগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে রবিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ২ টার সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই সদর এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করে উপজেলা ছাত্রলীগ। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা ওই বিক্ষোভ থেকে ডা. আফসারুল আমীনকে দল থেকে বহিস্কারের দাবি তোলা হয়। বিভিন্ন শ্লোগান লেখা পেস্টুন হাতে মহাসড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এরপর ছাত্রলীগ নেতারা মহাসড়কে সংসদ সদস্য আফসারুল আমীনের কুশপুত্তলিকা জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান। রবিবার রাতে করেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের উদ্যোগে করেরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। রবিবার বিকেলে বারইয়ারহাট পৌরসভা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, বারইয়ারহাট কলেজ ছাত্রলীগ, হিঙ্গুলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়ারহাট পৌরবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন আয়োজিত ‘টেকসই জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থাও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনার একপর্যায়ে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে চট্টগ্রাম ১০ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আফসারুল আমীনের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সাংসদ গণপূর্ত মন্ত্রীকে মারতে তেড়ে আসেন। এসময় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম তাকে নিবৃত্ত করেন। ওই অনুষ্ঠানে দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যেও হাতাহাতি হয়। পরে অনুষ্ঠানটিও পন্ড হয়ে যায়।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.