সীতাকুণ্ডে নির্বিচারে চলছে অবৈধ উপায়ে মাছের পোনা নিধন

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি : প্রশাসনের উদাসীনতা আর ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া পোনা ব্যবসার কারণে পোনা নিধনের ধুম পড়েছে সীতাকুণ্ড উপকুলীয় অঞ্চলে। সন্দ্বীপবাসীর পারাপারে ৫টিঘাটসহ সমুদ্র সংযুক্ত খাল এলাকায় কিছু অসাধু লোকজন প্রতিনিয়ত পোনা নিধন করে চললেও তা দেখছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ব্যাপক হারে পোনা নিধনের ফলে সমুদ্রে মাছের আকাল দেখা দিচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।উপজেলার সলিমপুর, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাট, কুমিরা,বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড, মুরাদপুর ও সৈয়দপুরসহ উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের সহযোগীতায় গড়ে উঠেছে পোনা ব্যবসায়ীদের অভয়ারন্য। এসব এলাকায় পোনা ব্যবসায়ীরা হতদরিদ্র জেলেদের ব্যবহার করে হরদম পোনা নিধন চালাচ্ছে সমুদ্রে।

বিন্নি জাল, মুশারী জালসহ বিভিন্ন আকৃতির জালের মাধ্যমে একটি চিংড়ি পোনা আহরণে মেরে ফেলাহচ্ছে অন্যান্য মাছের শত শতপোনা। আর এসব পোনা ক্রয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সমুদ্রউপকূলীয় অঞ্চলে গড়ে তুলেছে পোনা মজুদের আড়ত।আহরণকারীদের থেকে পোনা ক্রয়করে ব্যবসায়ীরা পাঠিয়ে থাকেদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। ব্যবসায়ী ও পোনা আহরণকারীদের অপরিকল্পিত পোনা আহরণের ফলে সমুদ্রে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ জেলেদের। অথচ পোনা নিধনের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেকেউই। তবে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের আঁতাতই তাদেরকে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার সাহস যোগাচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

অবৈধ পোনা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের ব্যাপারটিস্থানীয় প্রশাসন সবসময়ই এড়িয়ে যেতে চায়। প্রতিমাসে একবার করে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা থাকলেও গত এক বছরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে মাত্র ৩টি। প্রশাসনের এ ধরনের উদাসীনতায় সমুদ্রে কমছে মাছের সংখ্যা।সমুদ্র উপকূলীয় জেলে বলরাম জলদাস বলেন, ‘প্রকৃত জেলেরা কখনও পোনার জন্য অন্যান্য মাছ নষ্ট করবে না। বেড়িবাধ সংলগ্ন কিছু পোনা ব্যবসায়ীরলোকজন চুক্তি ভিত্তিতে পোনানিধন করছে। সমুদ্র হতে পোনাআহরণ নিষিদ্ধ থাকার পরও প্রতিনিয়ত চলছে চিংড়ি পোনা আহরন। প্রশাসন তা দেখার তো দূরের কথা গত কয়েক বছরেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ারও কোন প্রয়োজন মনে করেনি।

বরং ব্যবসায়ীদের সাথে তাদের যোগসাজশ আছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে প্রশাসনকে সন্মানী দিয়ে ব্যবসা করার কথা স্বীকার করেন পোনা ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান,তিনটি উপজেলার দায়িত্ব এক সাথে পালন করায় একটি কাজও সঠিকভাবে সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরপরও চেষ্টা করছি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পোনা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে ।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.