মো. শহিদুল ইসলাম,চট্টগ্রাম: টেকনাফ,কক্সবাজারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। বিদেশে ভালো চাকরীর লোভ দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিরীহ লোকজনকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে এ চক্র। এর পর দালালের মাধ্যমে নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও ভাড়া বাসায় নিয়ে রাখে। সেখান থেকে সুযোগ বুঝে কর্ণফুলি নদী, আনোয়ারা এবং বাঁশখালির বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে তাদের মাছ ধরার বোটে তুলে দেওয়া হয়। এর পর কেউ মালয়েশিয়া যেতে পারে। কেউ কেউ কোস্টগার্ডের হাতে গ্রেপ্তার সাগরে ডুবে মারা। কেউ বা মানবপাচারকারীদের হাতে খুন হয়।
এদিকে এই চক্রকে ধরতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে নজরধারী বাড়িয়েছে প্রসাশন। জানাগেছে, নিষিদ্ধ মানবপাচার ব্যবসায়ের জন্য কক্সবাজারের পাশাপাশি বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে চট্টগ্রামও। মানবপাচারের সাথে জড়িতদের অনেকের বাড়িও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে। তাই, মানবপাচার নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ায়, নড়েচড়ে বসেছে, চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন । তালিকাভুক্ত দালালদের ধরার চেষ্টার পাশাপাশি, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে সম্ভাব্য পয়েন্টগুলোতে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে মানবপাচার সবচেয়ে বেশি হয়, শহরের কর্ণফুলি নদী, আনোয়ারা এবং বাঁশখালির বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নজর রাখা হচ্ছে বেশি।
এসব পয়েন্ট থেকে এরআগেও পাচারের সময় আটক হয়েছে মালয়েশিয়াগামী যাত্রী এবং দালাল। বিভিন্ন দেশে অভিবাসীদের উদ্ধার নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ায় কক্সবাজারে চলছে বিশেষ অভিযান। তবে, এরসাথে চট্টগ্রামেও নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছে পুলিশ। মানবপাচারে জড়িত তিনশোর বেশি দালালের নাম রয়েছে পুলিশের তালিকায়। যাদের বেশিরভাগরই বাড়ি কক্সবাজারে। তবে এরমধ্যে ১৩ জন রয়েছে চট্টগ্রামের। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। এছাড়া মানবপাচারে অর্থ লেনদেনে জড়িত ২৬ হুন্ডি ব্যবসায়ির মধ্যে ৩ জনের বাড়িও চট্টগ্রামে। তাদেরও খোঁজা হচ্ছে জানান পুলিশের সিএমপির কর্মকর্তারা। অন্যদিকে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। উল্লখ্য, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৫ সালের জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি ও মার্চ এই তিন মাসে প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পাচার হয়েছে। এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। শুধু তাই নয়, এই তিন মাসে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে তিন শতাধিক লোক মারা গেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।