মিরসরাইয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় কলেজ ছাত্র নিহত

মিরসরাই প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে মমতাজ উদ্দিন টিপু নামের এক কলেজ ছাত্র। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মারা যায় সে। টিপু চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য।

গত ৪ এপ্রিল উপজেলার ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের কমলদহ বাজারে ছাত্রলীগও যুবলীগ কর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হয় টিপু। এই ঘটনায় টিপুর বড় ভাই রিয়াজ উদ্দিন নিলু বাদী হয়ে চট্টগ্রাম আদালতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং ১৩) দায়ের করেন। নিহত টিপু উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াহেদপুর গ্রামের মৃত মাষ্টার বশির আহমদের পুত্র।

নিহত কলেজ ছাত্র টিপুর বড় ভাই রিয়াজ উদ্দিন নিলু বলেন, ৪ এপ্রিল বিকেলে কমলদহ বাজারে আমাদের ভাড়া দেওয়া দোকানের ভাড়া তুলতে বাজারে যায় টিপু। এসময় বাজারের দক্ষিণপার্শ্বে একটি চায়ের দোকানে বসা ছিলো সে। এসময় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার খানসাবের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন, রৌশনের জামানের ছেলে শরীফ উদ্দিন সবুজ, খোরশেদ আলমের ছেলে রুবেল, টুটুল ও নাজমুলের নেতৃত্বে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত করে। আমার ভাই প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে যেতে চাইলে তারা আবারো গতিরোধ করে তাকে টেনেহেঁচড়ে বড়কমলদহ নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মৃত ভেবে সড়কের পাশে ফেলে চলে যায়। পরে মুমূর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ও শারীরিক অবস্থার অবণতি দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২৪ দিনপর আমার ভাই মারা যায়। ইতিপূর্বেও ওই সন্ত্রাসীরা আমি আমার বড় ভাই ও ছোট ভাইয়ের উপর হামলা করে।

এদিকে টিপুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ৭ ভাই ২ বোনের মধ্যে আদরের ছোট ভাই চলে যাওয়াকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা তার ভাইয়েরা। মা, বোন, আত্মীয়স্বজনদের আহাজারীতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। বসতঘরের মধ্যে বিলাপ করছেন মাও বোনরা। এসময় উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
ওই এলাকার বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলাম বলেন, টিপু খুবই নম্র, ভদ্র ছেলে ছিল। কিছুতে তাকে ভুলতে পারছিনা। কেন যে এইভাবে সন্ত্রাসীরা তাকে মেরে ফেললো বুঝতে পারছিনা। নিহত টিপুর বড় ভাই জহির উদ্দিন বলেন, আমরা ৯ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট টিপু। সে ছাত্র হিসেবে খুব মেধাবী ছিল। আমার আদরের ভাইকে সন্ত্রাসীরা অন্যায়ভাবে খুন করেছে। আমি খুনিদের বিচার চাই।

এই বিষয়ে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ এমকে ভূঁইয়া বলেন, হামলার ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছে তা এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমরা ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছি। আশা করছি শীঘ্রই তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.