যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাহফুজুরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :   ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির মামলায় গ্রেফতার । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, গ্রেফতারের দিন থেকেই ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত দেখানো হয়েছে; তাকে কারণ দর্শানোর কোনও নোটিসও দেওয়া হয়নি ।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সফিউল্লাহ জানিয়েছেন, চাকরির শর্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে গত ৪ মে থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

এরই মধ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই শিক্ষককে দুই দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গত শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম কাজী কামরুল ইসলামের কাছে জবানবন্দি দেন তিনি। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৫ পৃষ্ঠায় জবানবন্দিতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার দায় স্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক। এমনকি ছাত্রীদের ফ্লাটে নিয়ে তাদের নগ্ন সেলফি চাইতেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ফেরদৌস। এভাবে কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তোলেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সকলে প্রাপ্তবয়স্ক এবং উভয়ের সম্মতিতে এই সম্পর্ক হয়েছে বলে দাবি ওই শিক্ষকের। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ফেরদৌস বলেন, প্রথমে ছাত্রীদের শর্ত প্রদান করতাম। আমি তোমাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেব এবং ভালো নম্বর দিয়ে দেব। এর বিনিময়ে আমি যা চাইবো তা দিতে হবে। এতে ছাত্রীরা রাজি হলে তাদেরকে ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতাম। ফ্ল্যাটে নেওয়ার পর তাদের সঙ্গে গল্প করতাম এবং তাদের খালি গায়ে (নগ্ন) সেলফি চাইতাম। বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করতাম।

কোনো কোনো ছাত্রী আমার আচরণ বুঝতে পেরে চলে যেতো। আর যাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠতো তা উভয়ের সম্মতিতেই হতো। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব মেয়েই প্রাপ্তবয়স্ক। জবানবন্দিতে চার ছাত্রীকে যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেন মোহাম্মদ মাহফুজুর রশীদ ফেরদৌস। ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল সায়েম গত মঙ্গলবার রাতে কলাবাগান থানায় মামলা করেন। এরপর গভীর রাতে বাসা থেকে ফেরদৌসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বুধবার তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে শনিবার আদালতে তোলা হলে নিজের অপকর্মের কথা স্বীকার করেন আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগের (ইইই) শিক্ষক ফেরদৌস। এর আগে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.