ফটিকছড়িতে ইউপি নির্বাচনে নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামীলীগ পরিবার – পেয়ারুল ইসলাম

জুবায়ের সিদ্দিকী / জাহাঙ্গীর উদ্দিন মাহমুদ :  চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে রাজনীতির প্লাঠফরমে এ.টি.এম পেয়ারুল ইসলাম অত্যন্ত সুপারিচিত একজন ব্যক্তিত্ব। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনের ত্যাগী, পরিশ্রমি ও নির্যাতিত একজন নেতা হিসাবে ফটিকছড়ির রাজনীতিতে ভাল অবস্থানে রয়েছে। সাবেক ছাত্রনেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সারাদেশে আলোচনায় আসেন ভূজপুঁর ট্রাজেডীকে কেন্দ্র করে। এই ভূজঁপুরের নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডে তার শ্রম, মেধা ও ত্যাগ থাকলেও সেদিন পরিকল্পিত ভাবে তৎকালীন ওসি সামসুদ্দিনের সহযোগিতায় বিশাল একটি মিছিলকে ভূয়া তথ্য মাইকে প্রচার করে নিমর্ম হত্যাকান্ড, অগ্নিসংযোগ ও তান্ডব চালিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত শিবির। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হয়ে কোন পদ পদবী না থাকা সত্ত্বেও এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন নিরলস ও নিঃস্বার্থভাবে। আওয়ামীলীগের দুঃসময়েও তিনি দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। মাটি ও মানুষের স্বার্থে এখনও রাজনীতির সাথে জড়িত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। গত সাপ্তাহে আজকের সূর্যোদয়কে তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচন ফটিকছড়িতে হয়েছে।

১৪টিতে নির্বাচন হয়েছে বেশ ভালই। মোট ১১জন নৌকা প্রার্থী বিজয়ীলাভ করছে। বাকী গুলোতে জয়ী হতেন আমাদের প্রার্থীরা কিন্তু সেখানে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা সাংবাদিক সম্মেলন করে আমাদের জানিয়েছেন,আমাদের হয়রানী, নির্যাতন করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ এর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপি এবং আবার পরে যোগদিয়েছেন আওয়ামীলীগের ছাতার নিচে। হারুয়ালছড়ি, পাইন্দংসহ বিভিন্ন ইউপিতে প্রার্থীদের থেকে বিপুল পরিমান টাকা নেওয়া হয়েছে। এই ফটিকছড়ি আওয়ামীলীগের দূর্গ ছিল। একবার ছাড়া বার বার এই আসনটি ছিল আওয়ামীলীগের। এখানে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে হারানো হয়েছে। আমাদের প্রার্থীকে সকলে প্রার্থীতা প্রত্যহার করতে হয়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতিকে গুলি করা হয়েছে হারুয়ালছড়িতে। এভাবে টাকার ছড়াছড়ি হয়েছে একদিকে, অন্যদিকে অস্ত্রের ঝনঝনাতিতে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের। পুলিশ ও সন্ত্রসীদের লাগাতার ফটিকছড়ির আমাদের দলীয় নেতাকর্মীগণ নির্যাতিত হয়েছেন।

প্রার্থীরা শুধু নন, তাদের পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন করা হয়েছে পুলিশ দিয়ে। সরকার দলের, অথচ দলীয় প্রার্থীরা চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছেন ফটিকছড়িতে। অনেক আসনে ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে সুপরিকল্পিত ভাবে। এখানে কারা এসব করেছে ফটিকছড়িবাসী জানে। নাজির হাট কলেজের সাবেক ভিপি ও সাবেক ছাত্রনেতা এ.টি.এম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, আওয়ামীলীগ পরিবারকে বিছিন্ন করার একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত ছিল। সেদিন ফটিকছড়ি থানা থেকে শুরু করে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই মিছিলটি হয়েছে। ভূঁজপুর থানার তৎকালীন ওসি সামসুদ্দিন সেদিন অসহযোগিতা করেছেন। ভুঁজপুর পুলিশ সেদিন যদি এগিয়ে আসত তাহলে এতবড় তান্ডব হত না। বিএনপির সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নাশকতার বিরুদ্ধে আমাদের এই পদযাত্রা ছিল। এই ভুজঁপুরে রাস্তাঘাট সহ অনেক উন্নয়ন আমি কোন পদে না থেকেও করেছি। সেদিন মসজিদের মাইকে “বড় হুজুরকে” হামল করা হয়েছে। জামাত-শিবিরের এই তান্ডবের ব্যাপারে আমাদের কোন আগাম ধারণা ছিল না। ছাত্র রাজনীতি করেছি মানুষের সাথে সহ অবস্তান ছিল। আগের দিনও আমি হেয়াকো সহ কিছু জায়গায় সভা করেছি।

ওসি বদল হয়ে এই মামলাটি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। বাদীর সাথে কথা না বলে মনগড়া অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়েছে। এমনকি জেলা পিপির সাথে ও আলাপ করেনি পুলিশ। সাক্ষী দেওয়া হয়েছে প্রচুর। নয় জন চেয়ারম্যান, ডাক্তার, আইনজীবি অনেক ছিল কিন্তু সাক্ষী করা হয়েছে প্রভাসী অনেককে। পুলিশ গ্রেফতার বানিজ্য ও করেছে। এরপর মামলা নষ্টের প্রক্রিয়া করা হয়েছে। এখন মামলার রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে। আশাকরি আমরা এই হত্যকান্ডের বিষয় পর পেয়ারু বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিক। জীবনে ভোগ বিলাসের সাথে রাজনীতি করেনি। ভোগ নয় ত্যাগের মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করছি। সর্বকনিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যন হিসাবে নির্বাচিত হয়ে কাজ করেছি। সর্বকনিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়ে কাজ করেছি সরকারী অর্থ অপচয় করেনি। নয়ছয় হিসাবে জীবন অতিবাহিত করিনি। মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষের সাথে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে এখনও আছি। নব্বইদশক থেকে আপনিও আমাকে দেখছেন আন্দোলন সংগ্রামে।

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ফটিকছড়ির জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব পেয়ারু বলেন, আমরা রাজনীতি করি বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে। জীবনে আরাম-আয়েস, ভোগ বিলাসকে তুচ্ছ করে মাঠে ময়দানে কাজ করছি দলীয় নেতাকর্মীদের ভালবাসা এবং এলাকাবাসীর দোয়া নিয়ে। এই পথ যত কঠিন, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের হোক না কেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে একচুল নড়বো না। আল্লাহর অশেষ মেহেরবান মানুষ আমাকে নিজের সন্তান ও স্বজনের মত আগলে রাখেন আপদ বিপদে এলাকায়। আপনি নিশ্চয় জানেন, ফটিকছড়ির মাটি ও মানুষের স্বার্থে জীবনে অনেক চ্যলেঞ্জ ও বৈরী আবহাওয়াতে ও আমাকে রাজনীতি করতে হয়েছে। লোভ, লালসা, মোহ ও প্রলোভন জীবনে অনেক এসেছে এমপি-মন্ত্রি হতে। কিন্তু নীতি ও আদর্শকে কখনো জলাঞ্জলী দিইনি। দোয়া করবেন, যেন সারাজীবন মানুষের পাশে আল্লাহ রাখেন সুস্থ্য শরীরে।

ফটিকছড়ির কৃতিসন্তান ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ পেয়ারু বলেন আমাদের জননেত্রির আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় দেশ এগিয়ে চলছে। অর্থনৈতিক ভাবে অর্থনীতির জগতের পরিধি বাড়ছে। তিনি বলেন, ফটিকছড়ির হাজার হাজার মানুষ জীবন ও জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যেও বসবাস করছেন। দেশে তাদের কষ্টঅর্জিত টাকায় জাতির অর্থনীতির মেরুদন্ড চাঙ্গা থাকে অথচ তারা নানাভাবে বিমানবন্দর থেকে বাড়ী নিরাপত্তার অভাবে নিগৃহিত হয়। চট্টগ্রামে এই সরকার “প্রবাস পল্লী” স্থাপন করে তাদের প্লট বরাদ্দ সহ নানাভাবে সহযোগিতা করতে পারে। এব্যাপারে আমি মাননীয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী এবং চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান নুরুল ইসলাম বিএসসির সহযোগিতা কামনা করছি। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এ.টি. এম পেযারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক সম্মাণ অর্জন করেছেন। সকল ক্ষেত্রে আমরা শক্তিশালী।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা। মোবাইল আগে ধনীর গৌরবের ধন ছিল। এখন তা একজন খেটে খাওয়া রিক্সাওয়ালার কাছে ও আছে। আজ গ্রামে-গঞ্জে সকল মানুষ ডিজিটাল সেবায় কোন মধ্য সত্ত্বভোগী ছাড়াই সরাসরি ব্যবসা করছে। ডিজিটাল অর্থনীতি আমাদের মুক্তির প্রধান হাতিয়ার। গ্রামে-গঞ্জে সাধারণ জনগৌষ্ঠী সন্তানদের আইটি শিক্ষা গ্রহণে সকল ধরণের সহযোগিতা দেওয়া সরকারে দায়িত্ব দেওয়া বলে মনেকরি। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্টানে ডিজিটাল ধারণার জন্য শিক্ষক নিয়োগ জরুরি। পেয়ারু বলেন, এদেশে কোন উগ্রবাধীর কোন স্থান নেই। দেশে কোন জঙ্গিবাদ থাকতে পারে না। ইসলাম জঙ্গিবাদ ও সহিংতাকে সমর্থন করে না। মানুষ জঙ্গি বর্জন করেছে। তিনি বলেন, আপনি দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করছেন, আপনি বলুন এই সরকার সন্ত্রাস দমনে ও উন্নয়নে কতটা সফল? নিশ্চয় বলবেন, শতভাগ সফল।

জননেত্রি শেখ হাসিনার নির্দশনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন নগন্য কর্মী রাজপথে আছি, যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে-দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা বদ্ধপরিকর। মুক্তিযোদ্ধর চেতনায় লালিত আজকের নীতি ও আর্দশ বাস্তবায়নে জীবনকে অনেক আগেই উৎসর্গ করেছি। কাজেই কোন অপশক্তি এই অগ্রযাত্রাকে ঠেকাতে পারবেনা ইনশাআল্লাহ। ফটিকছড়ির মাটি ও মানুষের ভালবাসায় ও দোয়াতে মানুষের সেবায় আজীবন থাকব এই কামনা করি আল্লাহ্ পাকের দরবারে।

 সাক্ষাৎকারটি :  এ.টি.এম, পেয়ারুল ইসলাম, – সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.