খাদ্য উৎপাদন থেকে খাবার টেবিল পর্যন্ত মনিটরিং

ঢাকা : খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে আগে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তারপর অ্যাকশনে যাবো। নিরাপদ খাদ্য সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতেই নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় সারা দেশে ১৮টি মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে।

আইনটি ইউরোপ আমেরিকা, ভারত, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি দেশের আদলে কাজ করে সারাদেশে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করবে। প্রাথমিকভাবে সচেতনতা তৈরি করে পরবর্তীতে মোবাইল কোর্ট ও নিয়মিত কোর্টের মধ্যমে আইন প্রয়োগ করা হবে।

খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের আয়োজনে বুধবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন -২০১৩ এর মাধ্যমে খাবার উৎপাদন এর খামার বা মাঠ হতে খাবার টেবিল পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব। এর জন্য বহুমুখী সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর সচিব (যুগ্ম সচিব) আব্দুল বাতেন মিয়া বলেন, বাংলাদেশে সাড়ে পঁচিশ লক্ষ খাদ্য ব্যবসায়ী (১৩ দশমিক ৪২ লক্ষ একক খাদ্য ব্যবসায়ী), সরকারের ১৮টি মন্ত্রণালয়, ১১টি সিটি কর্পোরেশন, ৩২৩টি পৌরসভা, ৭০টি খাদ্য আদলত, ৬৪ টি জেলা ম্যাজিস্ট্রেসির মাধ্যমে এ সংস্থার পক্ষে দেশের খাদ্যমানকে আন্তর্জাতিক মানে এবং সকল খাদ্য নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে। এ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা সম্ভব।

বাংলাদেশ হোটেল রেস্তরাঁ মালিক সমিতির প্রথম সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বেনু বলেন, হোটেল রেস্টুরেন্টে বিষয়ে দেশে প্রশিক্ষণের অভাব। সে লক্ষ্যে সরকারের সহায়তায় যথেষ্ঠ পরিমাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করে কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ দিলে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমেদ অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন।

তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর ভিত্তি করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নামক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ এ বছরে ফরমালিন মুক্ত আম ও লিচু বাজারে পাওয়া যায়। এর জন্য বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, অন্যান্য সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতার মাধ্যমে এ বছর দেশবাসীকে ফরমালিন মুক্ত আম ও লিচু সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। সকল ক্ষেত্রেই এ পদ্ধতিতে নিরাপদ ভেজালমুক্ত খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩, রেস্তরাঁ, মিষ্টি, বেকারি, দুগ্ধজাত দ্রব্য, শাকসবজি, ফলমুল, প্যাকেটজাত খাবার নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন পন্থা নিয়ে প্যানেল আলোচনা ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। রেস্তরাঁ ও খাদ্যপ্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, এনজিও, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এর মালিকপক্ষ, গণমাধ্যমকর্মী ও ভোক্তা প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.