শাহপরীর দ্বীপ রক্ষায় সরকারের বড় উদ্যোগ

0

জামাল জাহেদ কক্সবাজার : কক্সবাজারের শাহপরীর দ্বীপকে বিলিনের হাত থেকে রক্ষায় বড় উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের এ দ্বীপটি একটি পর্যটন কেন্দ্র। এর আগে দ্বীপটি রক্ষায় চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সাগরের জোয়ার ও ঢেউয়ের আঘাত ওই বাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই দ্বীপটি রক্ষায় বাঁধটি সংস্তারের বিকল্প নেই। এই অবস্থায় বাঁধ সংস্কারে ১০৬ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধটির প্রায় আড়াই কিলোমিটার (২.৬৪৫ কিমি) পুনঃনির্মাণ এবং ঢাল সংরক্ষণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী বলেন, ওই এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রকল্পটি হাতে নেয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০১৮ সালে জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর হতে লবণাক্ত পানি রোধকল্পে এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ১৯৬৮ থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত পোল্ডার-৬৮ নির্মাণ করা হয়। পোল্ডারটি নির্মাণের পর থেকে বড় ধরনের কোনো পুনর্বাসন কাজ হাতে নেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে বাঁধটি ক্ষীণ ও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এছাড়া ১৯৭০, ১৯৯১ সালে সাইক্লোন ও ২০০৯ সালের আইলার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে পোল্ডারের অনেক স্থান ভেঙে যাওয়াসহ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০১২ সালের জুন মাসে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে ভারিবর্ষণ এবং তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে টেকনাফস্থ শাহপরীর দ্বীপের এ পোল্ডারে সি-ডাইক অংশে প্রায় দুই কিলোমিটার ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে ক্রমাগত সাগরের লোনা পানি পোল্ডারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় প্রকল্প এলাকায় ফসল, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, চিংড়ি চাষসহ লবণ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির প্রবল চাপে টেকনাফ ও শাহপরীর দ্বীপের একমাত্র সংযোগ সড়কটির অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের জোর দাবির মুখে এই এলাকার সি-ডাইক অংশের বাঁধের ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন কাজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এই কারিগরি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই প্রকল্পটি গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.