দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুসার বিরুদ্ধে স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেলে গত ১৯ মে তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে কমিশন।
প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই সময় বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস’র প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে এ অনুসন্ধান শুরু করা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে দুদকের ওই অনুসন্ধান আলোর মুখ দেখেনি। তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে অবারও নতুন করে মুসার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।
২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে প্রধান করে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করে কমিশন।
ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠায় দুদক। ১৮ ডিসেম্বর হীরার জুতা থেকে শুরু করে আপাদমস্তক মূল্যবান অলঙ্কারে সজ্জিত হয়ে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হন প্রিন্স মুসা। সঙ্গে ছিল নারী-পুরুষের ৮০ জনের এক দেহরক্ষী বহর। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুইচ ব্যাংকে জব্দ করা অর্থ ফেরত পেলে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিভিন্ন খাতে তা বিনিয়োগ করবেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান মুসা।
নোটিশে মুসার নিজের ও তার স্ত্রীর এবং মুসার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আরও সাত কার্যদিবস সময় বাড়িয়ে নেন মুসা। এরপর কমিশনের দেওয়া বর্ধিত সময়ের মধ্যে তিনি এ সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন।
সুইস ব্যাংকে আটকে থাকা ‘সাত বিলিয়ন ডলার’ অনুসন্ধান করতে গিয়ে মুসার আরও পাঁচ বিলিয়ন ডলারের তথ্য পেয়েছে দুদক। অর্থাৎ প্রিন্স মুসার মোট ১২ বিলিয়ন ডলার সুইস ব্যাংকে জব্দ রয়েছে, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসেবে)।
ওই অর্থ ছাড়াও গাজীপুর ও সাভারে মুসার নামে বিভিন্ন দাগে প্রায় ১২শ’ বিঘা সম্পত্তি রয়েছে। খাতা-কলমে ওই জমির মালিক তিনি। ১৯৭২-৭৩ সালে ওই সম্পত্তি ক্রয় করা হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকার উপরে (এক বিঘা এক কোটি টাকা হিসেবে)। অধিকাংশ সময় মুসা দেশের বাইরে থাকায় এসব সম্পত্তির খাজনা পরিশোধ করে নামজারি করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি জমিগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন।