জাবিতে অনিয়মের অভিযোগে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি

0

সিটিনিউজবিডি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কৌশিক সাহা’র বিরুদ্ধে কক্ষ বরাদ্দে অনিয়মসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন হলের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের নিকট প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কক্ষ বরাদ্দে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এক আবাসিক ছাত্রীর কক্ষ ২১ দিন ধরে তালাবদ্ধ করে রেখেছে হল প্রশাসন। প্রয়োজনীয় জামা-কাপড় এবং বইপত্রসহ রুমটি তালাবদ্ধ করে রাখায় মানবেতর জীবনযাপনে রবিবার রাতে শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর হলের এক কক্ষ বিশিষ্ট ৪২৩ নং রুমটির জন্য আবেদন করি। এসময় তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক লুৎফর রহমান কক্ষটি ফাঁকা হলে তাকে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।

প্রশাসনিক নিয়মানুযায়ী ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে পছন্দের রুম পাওয়ার ক্ষেত্রে জেষ্ঠ্যতা, উপস্থিতি এবং পরীক্ষার ফলাফলকে বিবেচনা করা হয়। অথচ নিয়ম ভঙ্গ করে গত জুলাইয়ে চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে রুমটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। জেষ্ঠ্যতার দিকে থেকে অযোগ্যতা ছাড়াও এই শিক্ষার্থী হলে নিয়মিত থাকেন না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, হল সুপার রোকেয়া বেগমের সাথে বরাদ্দ পাওয়া ওই শিক্ষার্থীর পূর্ব পরিচিতি থাকায় এ রুমটি তাকে দেওয়া হচ্ছে।

হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে মাস্টার্সের সকল শিক্ষার্থী হল প্রভোস্টের সাথে দেখা করতে যান। সেসময় ‘হল প্রভোস্ট তাদের সাথে রূঢ় আচরণ করেন’ বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইনসানা তানজিন ইকো বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমাদের ব্যাচের-ই (মাস্টার্স) কেউ কক্ষটি পাবার কথা। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে অনিয়মিত হওয়া সত্ত্বের জুনিয়র শিক্ষার্থীকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হল সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা হল প্রভোস্ট স্যারের সাথে কথা বলতে গেলে আমাদের সবার সাথে রূঢ় আচরণ করা হয়।”

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, হলের আগের নিয়ম অনুসারে আমাকে রুমটি পাওয়ার কথা। এমনকি রুমটি পাওয়ার জন্য আমি অনেক আগেই আবেদন করেছিলাম। কিন্তু নতুন এ প্রভোস্ট এসে আমাকে রুমটি না দিয়ে অন্য আরেকটি মেয়েকে ওই রুমে উঠাচ্ছেন।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই হলটির ডাইনিং চালু না থাকায় শিক্ষার্থীদের খাবার খেতে নানা সমস্যা হচ্ছে। এছাড়াও হলটির ১০১, ১০২, ও এ এবং বি ব্লকের ১০৩ নাম্বার রুমগুলো খালি পরে আছে। অথচ ওই হলের ৪৫তম ব্যাচের প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী হলের কমনরুমে রাতযাপন করছেন। এর জন্য হল প্রাধ্যক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।

এসব বিষয়ে হল প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক কৌশিক শাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ছুটিতে আছি এখন কিছু বলতে পারবো না।” তবে স্মারকলিপি পাওয়ার পর বিষয়টি অতি দ্রুত সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.