পটিয়ায় বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু শুক্রবার

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধি : অবশেষে সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে আগামী (শুক্রবার) ২৫ নভেম্বর। এটি পটিয়ার ইন্দ্রপোল শিল্পনগরী থেকে বাইপাস হয়ে চক্রশালা গিরিশ চৌধুরী বাজার বর্তমান পটিয়া বাস টার্মিনাণ সংলগ্ন মহা-সড়কের সাথে যুক্ত হবে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও বান্দরবানগামীদের দূরত্ব এবং সময় দুই বাঁচবে।

আর পটিয়া শহরের পরিধিও বাড়বে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন অনেকে। শুক্রবার পটিয়া থেকে দুই দুই বার নির্বাচিত সাংসদ পরিকল্পনা ও প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ¦ সামশুল হক চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজ উদ্বোধন করবেন বলে সওজ সূত্রে জানা গেছে। এটি আগামী ১৮ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। এতে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে র‌্যাব আরসি বিল্ডার্স লিমিটেড নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত সপ্তাহে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যাদেশ পায়।
জানা যায়, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পটিয়ার মনসার টেক থেকে দোহাজারী সাঙ্গু ব্রীজ পর্যন্ত ৯৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৬ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। ওই বছর ২৫ জুন ইসলাম ট্রেডিং কনসোটিয়াম লিমিটেড (আইটিসিএল) নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্টানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ওই প্রকল্পের মধ্যে পটিয়া শহর এলাকাকে যানজটমুক্ত করণের লক্ষ্যে পটিয়া ইন্দ্রপোল থেকে চক্রশালা গিরিশ চৌধুরী বাজার পর্যন্ত ৫.০২ কিলোমিটার পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি অর্ন্তভূক্ত ছিল।
পরে ঐ বাইপাস সড়ক প্রকল্পের জন্য ২৫ কোটি ৭৮ লাখ ৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৮.৬১৫ একর ভূমি অধিগ্রহন করা হয়। এতে বাইপাস সড়ক ছাড়া দোহাজারী ব্রীজ পর্যন্ত সড়ক প্রসস্থকরণ ও ৪৯টি বিপদজনক বাক সোজা করণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহন, ক্ষতিপুরণ ও পুনর্বাসন বাবদ আরো ১৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়। পরে নিয়োজিত ঠিকাদার ৪ বছরেও কাজ শেষ করতে না পারায় ওই প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার পাশাপাশি পটিয়া বাইপাস নির্মাণ প্রকল্পটিও থমকে যায়।

পরবর্তী পর্যায়ে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পটিয়ার সাংসদ আলহাজ¦ সামশুল হক চৌধুরী পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিগত ৮ বছর ধরে পটিয়ার উন্নয়ন বিরোধী একটি চক্র এ প্রকল্পকে নৎসাত করতে নানান ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে পটিয়া শহরে যানজট স্থায়ী রূপ ধারণ করে। বর্তমানে প্রকল্পটি সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর প্রচেষ্ঠায় আলোর মুখ দেখায় উন্নয়কামী মানুষের মাঝে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তৎকালীন ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ইসলাম ট্রেডিং কনসোটিয়াম লিমিটেড (আইটিসিএল) এর ব্যবস্থাপক কানু চক্রবর্তী বলেন, ২০১২ সালে কাজ শেষ করার কথা বলা হলেও পটিয়া অংশে সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটি গ্যাসলাইন ও অপটিক্যাল ফাইবার সরানোসহ অধিগ্রহন ও উচ্ছেদকৃত ভূমির দলিল বুঝিয়ে না দেয়া এবং বাইপাস সড়কের মধ্যে বড়–য়া পাড়ায় বিহার নিয়ে সমস্যা গত ৪ বছরেও শেষ করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। এ কারণে আমরা বাইপাস এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় বক্সকালর্ভাট, মহাসড়ক অংশে বেশ কয়েকটি বড় ব্রিজের পাইলিংয়ের কাজ শেষ করেও উল্লেখিত সমস্যার কারণে সময়মত কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পটি বাতিল হয়।
যোগাযোগ করা হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দোহাজারীর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া বলেন, পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অবশেষে আগামী ২৫ নভেম্বর শুক্রবার থেকে শুরু হবে। আগামী ১৮ মাসের মধ্যেই এ কাজ ঠিকাদার কর্তৃক বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। আমাদের বিশ^াস এ কাজ যথাসময়ে শেষ হলেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া শহরের যানজট নিরসন হবে। কক্সবাজার ও বান্দরবানগামী পর্যটকরা নির্বিঘেœ যাতায়ত করতে পারবে। এতে তাদের যানজটের ভোগান্তি ও সময় বাচবে।
পটিয়া পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশীদ বলেন, পটিয়া সাবেক মহকুমা শহর বর্তমানে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পটিয়া শহরের পরিধি যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনী আমরা পটিয়াকে যানজমুক্ত নগরী হিসেবে গড়তে পারবো।
পটিয়ার সাংসদ আলহাজ¦ সামশুল হক চৌধুরীর কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ প্রকল্পটি একটি মহল নানাভাবে ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্ঠায় লিপ্ত ছিল। আমি উদ্যোগ গ্রহণ করে পটিয়ার বৃহত্তর স্বার্থে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় কোন চক্রান্তই আরা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। আমার বিশ^াস প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে পটিয়া শহরের পরিধি অনেকাংশে সম্প্রসারিত হবে এবং পটিয়া হবে যানজটমুক্ত নগরী।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.