মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে : ইছহাক মিয়া

0

সিটিনিউজবিডি : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য সাবেক গণ পরিষদ ও সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইছহাক মিয়া বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত স্থানগুলো চিহ্নিত ও সংরক্ষণ করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব। এ কাজের সাফল্যের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করার কাজটি সহজতর হবে।

আজ নগরীর নজরুল স্কয়ার (ডিসি হিল) প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু বইমেলা মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষনে এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। যুদ্ধের কোন সুখের স্মৃতি থাকে না। যুদ্ধের ফল লাভ সুখের হতে পারে। বাঙালির জীবনে তা-ই হয়েছে। দুইপক্ষের যুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং পটভূমিতে জড়িয়ে আছে অনেক দুঃখের ঘটনা, অনেক বেদনার স্মৃতি। পাকিস্তান বাহিনী বাঙালিদের নির্যাতনের পর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে হত্যা করেছে, যে স্থানগুলোকে আমরা বলি বধ্যভূমি। গণহত্যার স্বীকার হয়ে যাদের ঠাঁই হয়েছে গণ কবরে। সে কবরগুলোও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-উপাদান।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ভেবেছিল এই দেশে আওয়ামী লীগ থাকবে না, স্বাধীনতা থাকবে না। সবুজের বুকে লাল পতাকা উড়বে না। কিন্তু ওই মীরজাফররা জানত না জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। আজ দেশের মানুষ বলে শেখ হাসিনার হাতে দেশ আজ পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিনিষ্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি কমরেড শাহ আলম বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং এ দেশীয় সহযোগী জামাত ইসলামী এবং তাদের নেতা কর্মীরা যে নির্মম গণহত্যা পরিচালনা করেছিল, সে অপরাধের ক্ষমা নেই। ইতিহাসের আমোঘ দন্ড তাদের ভোগ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে স্বস্তি পাচ্ছি, যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হচ্ছে। এই প্রত্যয় নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। এটাই আশা এবং ভরসা বাংলাদেশ মানবতাবিরোধী পাপমুক্ত হবে।
বঙ্গবন্ধু বইমেলা ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব উদযাপন পরিষদের কো চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা স্বাস্থ্য স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউকের সভাপতিত্বে মেলা পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী সংস্কৃতিকর্মী খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা: এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য রফিউল হায়দার রফি, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত দাশ।
এতে উপস্থিত ছিলেন মেলা পরিষদের কার্যকরী মহাসচিব সুমন দেবনাথ, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বাপ্পী, নগর যুবলীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান শিমুল, রবিউল ইসলাম চৌধুরী, এডভোকেট নজরুল ইসলাম, এডভোকেট কামরুল আজম চৌধুরী টিপু, এডভোকেট টিপু শীল জয়দেব, রেবা বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সংগঠক নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, দিলীপ সেন গুপ্ত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী। বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেন বেতার, টেলিভিশন ও নব প্রজন্মের শিল্পীবৃন্দ। আলোচনা সভা শেষে দলীয় নত্যৃ পরিবেশন করেন ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র, বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বেতার, টেলিভিশন ও নব প্রজন্মের শিল্পীবৃন্দ।
আগামীকাল ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মঞ্জে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য প্রফেসর ড. আ আ স ম আরেফীন সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক হোসাইন কবির, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক মহসিন চৌধুরী, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা বালাগাত উল্লাহ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.