হাতুড়ি ও শাবলের আঘাতে ১৬০ বছরের প্রাচীন মসজিদ ধ্বংস

0

সিটিনিউজ ডেস্ক :  ১৮৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুরের প্রখ্যাত জমিদারের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক শেখ মোহাম্মদ বদল মুন্সি জামে মসজিদটি আর রক্ষা করা গেল না। ১৬০ বছরের প্রাচীন এই ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বেঁচে থাকলেও ঘাতক ইতিহাসদ্রোহী কিছু কতিপয় স্বার্থান্বেষী মানুষের শাবল ও হাতুড়ির আঘাতে ১২ জানুয়ারি ২০১৭ বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে এই প্রাচীন মসজিদটি ভেঙে ফেলা হলো। ভেঙে ফেলা হয় দৃষ্টিনন্দন ১২টি ছোট গম্বুজ ও বিশাল আকারের এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটিকে।

মসজিদের মোতোয়াল্লী শেখ মোহাম্মদ শফিউল কাদের চৌধুরী ঐদিন রাতে বারেবারে স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিক অবহিত করেও এই ঘাতকদের হাত থেকে মসজিদটি শেষ রক্ষা হলো না। মসজিদটি রক্ষার জন্য দীর্ঘ এক বছর ধরে শেখ মোহাম্মদ বদল মুন্সি জামে মসজিদ ওয়াকফ এস্টেট, শেখ মোহাম্মদ বদল মুন্সি স্মৃতি পরিষদ ও চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সাংস্কৃতিক মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পৃথক পৃথক ভাবে ঐ মসজিদটি প্রতœ আইনে সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য একাধিকবার স্মারকলিপি প্রদান করেও শেষ পর্যন্ত এই প্রাচীন মসজিদটি রক্ষা করা গেল না।

এলাকার কতিপয় ইতিহাস অসচেতন ব্যক্তি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ওয়াকফ প্রশাসকের সরকারি অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তিকে আইন অমান্য করে রাজনৈতিক বলীয়ানে শক্তি প্রদর্শন পূর্বক মসজিদটিকে ভেঙে ফেলে। তিনি এই জঘন্যতম কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ইতিহাস হত্যাকারী চিহ্নিতপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। উল্লেখ্য যে, মসজিদটি রক্ষার জন্য চট্টগ্রামের ইতিহাস সচেতন জনগণ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সম্মুখে মানববন্ধন, প্রেসক্লাবে সেমিনার ও গণসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের পরও অসচেতন মূর্খ জ্ঞানপাপীদের রাজনীতির বল প্রদর্শনে সৎ মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ও ইতিহাসের সমুজ্জ্বল আলোকচ্ছটাকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিল।

অথচ পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাস প্রাচীন প্রতœ সম্পদ দিয়েই প্রদর্শন হয়। আর আমাদের বাংলাদেশে একটি প্রাচীন প্রতœ সম্পদকে রক্ষার চাইতে ধ্বংস করার মানসের লোকদের কারণে শত বছরের প্রাচীন একটি ইতিহাসের যবনিকা ঘটল। এর চাইতে দুঃখ ও লজ্জাজনক বিষয় চট্টগ্রাম তথা বাঁশখালীর জন্য আর কি হতে পারে? ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার হওয়া এখন এই এলাকার মানুষের সময়ের দাবি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.