নিজস্ব প্রতিবেদক::লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বহির্নোঙরে ১৫ লাখ টনের বেশি পণ্য বোঝাই ৩০টি মাদার ভ্যাসেল সাগরে ভাসছে। এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের জন্য একটি লাইটারেজ জাহাজ পাওয়া যায়নি। লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) রবিবার পূর্ব নির্ধারিত বার্থিং মিটিং বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।
অপরদিকে কর্ণফুলী নদীর ষোলটি ঘাট পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। এসব ঘাটে পণ্য বোঝাই ৬০টি লাইটারেজ জাহাজ অলস বসে আছে। লাইটারেজ শ্রমিকরা কাজ না করায় চট্টগ্রাম বন্দর এই সংকটে পড়ে। আর একই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ। শুধু জাহাজ ভাড়াই নয়, ব্যাংক ঋণের সুদ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা, ভবনের ভাড়াসহ ব্যবসা পরিচালনার কোটি কোটি টাকার ক্ষতিও নিয়মিত হচ্ছে। বহির্নোঙরে জাহাজে কাজ বন্ধের সাথে সারা দেশের পণ্য পরিবহন নেটওয়ার্ক ঘনিষ্টভাবে জড়িত। একটির ছন্দপতনে পুরো সিস্টেমই ভেঙ্গে পড়ে বলে ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা মন্তব্য করেছেন।
সরকার ঘোষিত বেতন-ভাতার দাবিতে সোমবার তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছে লাইটার শ্রমিক ইউনিয়ন। শনিবার সকাল ১০টা থেকে লাইটারেজ শ্রমিকদের একাংশ কর্মবিরতি শুরু করে। কার্যত একাংশ আন্দোলনে গেলেও পুরো খাতই মুখ থুবড়ে পড়েছে।
মাস তিনেক আগে টানা এগারদিন বন্ধ ছিল লাইটারেজ জাহাজ চলাচল। ওই সময় বন্দরের বহির্নোঙরে সত্তরটিরও বেশি জাহাজ আটকা পড়েছিল। যার ধকল এখনো সামাল দিতে হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরকে। ইতিমধ্যে আবারো নতুন করে ধর্মঘট শুরু করায় পরিস্থিতি আরো সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে বলে গতকাল বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত বেতন ভাতা প্রদানের জন্য আমরা অনেকদিন ধরে বলে আসছি। কিন্তু মালিকপক্ষ আমাদের কথা শুনছেন না। সরকার বেতন ভাতা বাড়িয়েছে এই অজুহাতে জাহাজ মালিকরা ভাড়াও বাড়িয়েছেন। এক একজন মালিক ভাড়া বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন অথচ শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দিচ্ছেন না। তাই আন্দোলন না করে শ্রমিকদের কোন উপায় নেই বলেও শাহাদাত হোসেন মন্তব্য করেন।