ছাত্রলীগ খুনোখুনিতে বেপরোয়া

0

জুবায়ের সিদ্দিকী / গোলাম শরীফ টিটু : রাজনীতির ক্ষমতার দ্বন্দ্ব লাশের মিছিল দিন দিন শুধু বড় হচ্ছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও খুনোখুনিতে মায়ের বুক খালি হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে একের পর এক হত্যাকান্ড চট্টগ্রামে ঘটে চলেছে। এতে করে বেসামাল হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতি। গত চার বছরে টেন্ডার নিয়ন্ত্রন, আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতেই খুন হয়েছে কমপক্ষে ১১ জন।

যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, প্রজন্মলীগ নেতাকর্মী ছাড়াও রয়েছে সাধারন মানুষ ও শিশু। এ ছাড়া বিভিন্ন ছোটবড় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে দেড় শতাধিক। সর্বশেষ গত সপ্তাহে দুইদিনের ব্যবধানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পটিয়াতে বাহাদুর ও নগরীতে ইয়াছিন নামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বাহাদুর আওয়ামী প্রজন্মলীগ পটিয়া কোলগাঁও ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও ইয়াছিন সরকারী সিটি কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী।

নিহতদের পরিবার বলছে,’ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে খুন হওয়া মামলাগুলোর বিষয়ে খুব বেশি আন্তরিক নয় পুলিশ। বিভিন্ন হত্যার ঘটনা উদঘাটিত হলেও রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকার কারনে অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে থাকেন। বিগত সময়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে সংঘটিত খুনের ঘটনার কোনটির বিচার হয়নি। উল্টো ঘটনার পর গ্রেফতার হওয়া আসামীরা জামিনে মুক্ত হয়ে নিহতদের পরিবারদের হুমকি ধামকি দেন। নিজ সহকর্মীদের হাতে খুন হওয়া দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবদুল মালেক জনি হত্যা মামলার বাদী আবদুল মাজেদ চৌধুরী বলেছেন,’ জনি ভাইয়ের হত্যা নিয়ে প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত অবগত আছে।

তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও মামলাটির বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এরপরও রাজনৈতিক মারপ্যাচে পড়ে মামলাটির কোন সুরাহা হয়নি। এখনো ভাই হত্যা মামলার বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে মামলা চালিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের বিচারে রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব না পড়লে নতুন করে খুনোখুনি হত না। সন্তান হারা এক পিতা বললেন,’ ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে অনেক ঘুরেছি। নেতারাই হত্যাকান্ডের বিচারে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের সব অর্জন ছাত্রলীগ বিসর্জন দিলেও নেতারা নিজেদের শক্তি ধরে রাখার জন্য অভিযুক্ত ছাত্রনেতাদের পক্ষে থাকেন। গত চার বছরে চট্টগ্রামে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে নিহত হয়েছেন দশজন।

২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারী ছাত্রলীগের প্রতিষ্টাবার্ষিকী পালনকালে নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতেই খুন হন দক্ষিন জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবদুল মালেক জনি। এভাবে অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এই সরকারের আমলে নিহত হলেও একটিরও কোন সুরাহা হয়নি। সন্তানহারা মায়ের আর্তনাদ এখনো গুমরে মরছে। কোন বিচার হচ্ছে না ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হত্যার। লাশের দীর্ঘ সারি দিন দিন বাড়ছে।

উল্লেখ্য, শনিবার(১৮ফেব্রুয়ারী) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেইসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন আহত হয় ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.