ঘুমধুমে পাহাড় কাটায় জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেট

0

শহিদুল ইসলাম,উখিয়া : উখিয়ার পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে অবৈধ পাহাড় কাটতে গিয়ে ২ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু ও অপর ২ শ্রমিকের পঙ্গুত্বের ক্ষত না শুকাতেই ফের শুরু হয়েছে পাহাড় কাটা। পাহাড় কাটা বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট অবৈধ পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে চলছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজে ঘুমধুমের যত্রতত্র পাহাড় কেটে মাটি সরবরাহ দিয়ে আসছিল প্রভাবশালী একাধিক সিন্ডিকেট। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ উপায়ে পাহাড় কাটলেও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিলও নিরব। পাহাড় কাটার শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক রুপন বড়ুয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।এতে ঘুমধুম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সহ ৯ জনকে এজাহার ভূক্ত আসামী করা হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল ঘুমধুমে পাহাড় কাটা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। পূর্বে ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খালেদ সরওয়ার হারেছ, প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন ও কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন পৃথক ভাবে ৩ টি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে আসছিল। ২ শ্রমিক নিহত ও ২ শ্রমিক পঙ্গুত্বের ঘটনায় কামাল উদ্দিন সিন্ডিকেট মামলায় এজাহারভূক্ত হয়ে বর্তমানে জামিনে রয়েছে।

সেই থেকে পাহাড় কাটা তার নেতৃত্বে বন্ধ। ইতিপূর্বে শ্রমিক জয়নাল আবেদীন নিহতের ঘটনায় রহস্যজনক কারণে অপর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। গত ক’দিন ধরে ফের পাহাড় কাটা শুরু করেছে কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন সিন্ডিকেট। বর্তমানে তার নেতৃত্বে তার বসত বাড়ি ভিটির অংশ,মৃত নছরত আলীর পুত্র আলী জুহারের পাহাড়, মকছুদুর রহমানের পাহাড় থেকে অবৈধ ভাবে মাটি সরবরাহ দিচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজে। পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের নির্দেশ থাকা স্বত্বেও কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর ঘনিষ্টজন ও উপজেলা পর্যায়ের এক প্রভাবশালী নেতার প্রভাব খাটিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে চলছে।

ঘুমধুম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ইতিপূর্বে যারা পাহাড় কাটায় জড়িত তারা আইনের আওতায় আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাকে ও আমার আত্মীয় স্বজনকে মামলায় অভিযুক্ত করে হয়রানি করা হয়েছে। বর্তমানে আমরা জামিনে আছি এবং পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুমে যত্রতত্র পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশ বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল জানান, সম্প্রতি ঘুমধুম সফর করে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দিই। ঘটনাস্থল থেকে মাটিবর্তী ২টি মিনি ট্রাক জব্দ করে অর্থদন্ড করি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.