আনোয়ারায় প্রথম ডিজিটাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

0

জাহেদুল হক,আনোয়ারা : আনোয়ারা উপজেলায় প্রথম ডিজিটাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়। আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল সমস্যাকে সহজ করে তোলার এ উদ্যোগ নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে উপজেলার আধুনিক শিক্ষাঙ্গনে তার দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এ বিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়ন বর্তমানে উপজেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনুসরণ করতে শুরু করেছে।

জানা যায়, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। ১০৯ শতক জমির উপর গড়ে উঠা এ শিক্ষাঙ্গনের চতুর্দিকে রয়েছে টেকসই নিরাপত্তা বেষ্টনী। এর বাইরে আরো ১৪৪ শতক জমি থেকে আয়কৃত অর্থ যোগান দিচ্ছে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডে। দক্ষ ব্যবস্থাপনা কমিটি আর অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী দ্বারা পরিচালিত এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফলাফলও আশানুরুপ। তবে শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনেকটা বিঘ্নিত হচ্ছে। যে কারণে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা বিশিষ্ট আরেকটি ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। এটি পুরোপুরি তৈরি হলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি অবস্থার পরিবর্তনে প্রয়োজনবোধে সেকশন বাড়ানোর কথা বলেছেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কবির আহমদ।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া লাগে। গোটা উপজেলার মধ্যে এই প্রথম কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থী,শিক্ষক,কর্মচারীর হাজিরা কার্যক্রম চালু করে। আর মুহুর্তেই ছাত্র-ছাত্রীদের আগমন-প্রস্থান সম্পর্কিত তথ্য অভিভাবকদের মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে পৌঁছে যায়। এতে করে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপস্থিতি,ক্লাস বর্জন,সর্বোপরি অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা বহুাংশে হ্রাস পেয়েছে।

 

শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ল্যাবে
শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ল্যাবে

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক ২৪ টি ক্লোজ সার্কিট(সিসি) ক্যামেরা। যার মাধ্যমে পুরো ক্যাম্পাস ও প্রশাসনিক ভবন নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অমনযোগী ,ক্লাস ফাঁকি,অনিয়ম-সংঘর্ষ এড়াতে এ সার্ভিস চালু করা হয়। তারবিহীন নেটওর্য়াক(ওয়াইফাই) সুবিধা চালু ও ই-পেমেন্ট সার্ভিস কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী লতিফা আহমেদ ওসামা জানায়, আমাদের বিদ্যালয়টি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি কমেছে এবং আগের চেয়ে শিক্ষার মান বেড়েছে।

এছাড়া কম্পিউটার ল্যাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ই-মেইল সুবিধা পাবে। মানসম্মত বিজ্ঞানাগার, ফটোকপি মেশিনসহ অন্যান্য ষ্টেশনারিজ সুবিধা ও শিক্ষার্থীদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ল্যাবে ই-লাইব্রেরি সুবিধা ব্যবহার করে বিশ্বের জানা-অজানা তথ্য পেয়ে থাকে। বিদ্যালয়ে সার্বক্ষণিক এসব সেবা নিশ্চিত করতে বিদ্যুতের পাশাপাশি আইপিএস ও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য এ বছর শিক্ষা সপ্তাহে এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের খ্যাতি অর্জন করেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ওসমান গনী বলেন, সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ উদ্যোগে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসা উচিত। এ কথা চিন্তা করে বিদ্যালয়টি তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় আনা হয়। এ পদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থার মানের অনেক উন্নয়ন সাধন সম্ভব হয়েছে। যা বর্তমানে উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ পদ্ধতিটি অনুসরণ করে চলছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.