বালু মহালের সীমানা জটিলতা, আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় রুল

0

এম. রমজান আলী, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে: কর্ণফুলী নদীর ইজারাকৃত ৪০ একর বালু মহলের অবস্থান চিহ্নীত করে দিতে গরিমসি করার অভিযোগে এক ইজারাদারের দায়ের করা আবেদনে উচ্চ আদালত প্রশাসনের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা রুল জারি করেছে। যাদের বিরুদ্ধে এই রুল জারি করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, একই উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

রাউজানের নোয়াপাড়া মৌজায় কর্ণফুলী নদীর গত বছর ইজারাকৃত ৪০ একর বালু মহলের অবস্থান নিয়ে মাওয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ আলম প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনিত এক অভিযোগের ভিত্তিতে উচ্চ আদালত এই রুল জারি করেন।

জানা যায়, বাদি ২০১৬ সালে কর্ণফুলী নদীর রাউজান নোয়াপাড়া মৌজার ৪০ একর বালু মহল (১নং ব্লকে) ইজারা নিয়েছিল। কার্যাদেশ পেয়ে ইজারাকৃত জায়গায় বালু উঠাতে গেলে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। বাঁধা প্রদানকারীরা ইজারাদারকে বলেছে সরকার যেই স্থানটি ইজারা দিয়েছে সেটির অবস্থান কোথায় তা চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত রাউজান অংশ থেকে বালু উঠানো যাবে না। ইজারাদার এমন বাঁধা পেয়ে বিষয়টি নিয়ে স্মরণাপন্ন হয় সংশ্লি¬ষ্ট প্রশাসনের কাছে। আবেদন করেন ইজারাকৃত বালু মহল চিহ্নিত করে দিতে।

অভিযোগ রয়েছে বাদি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে ইজারাকৃত জায়গা চিহ্নিত করে দিতে বার বার ধর্ণা দিয়ে সফল না হওয়ায় ২৪ অক্টোবর সংশ্লি¬ষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বরাবর একটি আইনগত নোটিশ পাঠায়। নোটিশের মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার অনুরোধ জানান। এতে সাড়া না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি গত ১৬ নভেম্বর আশ্রয় নেয় উচ্চ আদালতে।

বাদির আরজির প্রেক্ষিতে বিচারপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিচারপতি বদরুজ্জামান এর বেঞ্চ এলজিআরডি সচিব, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভুমি), থানার ওসি সহ ছয়জনকে ২ সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে জবাব দিতে নিদেশনা প্রদান করেন। কিন্তু সংশ্লি¬ষ্ট প্রশাসন আদালতের এই নিদেশনার প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে গত ১ মার্চ নতুন করে ৯৮টি বালু মহল ইজারার দরপত্র আহ্বান করেন। বালু মহলের ইজারার তালিকায় ছিল বিরোধীয় কর্ণফুলী বালু মহল ১ ব্ল¬কটিও। নতুন ইজারার তালিকায় কর্ণফুলীর নোয়াপাড়া মৌজার বালুমহলটি থাকায় ক্ষুদ্ধ বাদী আবারো উচ্চ আদালতে রিট করেন। বিচারপতি মোঃ আশরাফুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাশের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ আদালতের এই নিদেশনার অমান্য করার জন্য কেন আদালত অবমাননার দায়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চান। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে আদালতের এই নিদেশনার কপিটি ইতিমধ্যে প্রশাসনের ছয় কর্মকর্তার দপ্তরে পৌঁছে গেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেছেন তিনি আদালত থেকে এসংক্রান্ত কোনো পত্র পাননি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.