স্পোর্টস ডেস্ক::শ্রীলঙ্কাকে দ্বিতীয় ইনিংসে অল্পতে গুটিয়ে দেওয়ার বারবার সম্ভাবনা জাগিয়েও হয়নি। ওপেনার করুণারত্নের ১২৬ রানের বিরাট বাঁধার পর লঙ্কান শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালেন।
মুশফিকদের হতাশ করে লঙ্কান নবম ও দশম উইকেটে তুলেছে যথাক্রমে ২১ ও অপরাজিত ৩০ রান। শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় ৮ উইকেটে ২৬৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। হাতে দুই উইকেট, এগিয়ে ১৩৯ রানে। পি সারা ওভালে বাংলাদেশ আপাতত ভালো অবস্থায় থাকলেও চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে বাংলাদেকে। চ্যালেঞ্জ যতো এখানেই। শেষ ইনিংসে খুব ভালো করার নজির নেই। তাও আবার প্রতিপক্ষের মাঠে।
তারপরেও বলা যায় আপাতত কলম্বো টেস্টের লাগাম বাংলাদেশের হাতেই। টার্গেট যদি ১৫০-১৬০ রানের হয় তাহলে খুব বেশি কঠিন হওয়ার কথা নয়। তবে অনেক কিছু নির্ভর করবে দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্যের উপর।
রবিবার ম্যাচের শেষ দিন। সকালে ব্যাট করতে নামবেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান পেররা ও লাকমাল। পেরারা ২৬ ও লাকমাল ব্যাট করছেন ১৬ রানে।
রবিবার সকালে যদি এ জুটি আরো ৩০-৪০ রান করে ফেলে এবং তাহলে সেটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁদাবে টাইগারদের জন্য।পি সারার যে উইকেট তাতে চতুর্থ ইনিংসে ১৭০- ১৮০ রানের টার্গেট সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য।
শুক্রবার তৃতীয় দিনে যে ১৩ ওভার ব্যাট করেছিল লঙ্কানরা, তাতে চিন্তা ধরিয়ে দিয়েছিল টাইগারদের। বিনা উইকেটে ৫৪ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংসে দাপুটে ব্যাটিংয়ের ঘোষণা দিয়ে রাখেন তারা।
তবে চতুর্থ দিন শুরু হয় লঙ্কানদের উইকেট হারানো দিয়ে। দিনের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উপুল থারাঙ্গাকে বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু শুরুর এই ধাক্কা ভালোমতোই কাটিয়ে ওঠে লঙ্কানরা। উইকেটে থিতু হয়ে যান দিমুথ করুনারাত্নে এবং কুশাল মেন্ডিস। প্রথম সেশন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১৩৭ রান। এর পরের গল্প মোস্তাফিজ ও সাকিবের তথা বাংলাদেশের।
১৪৩ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। কুশল মেন্ডিসকে ৩৬ রানে বিদায় করেন মোস্তাফিজ। ভাইটাল উইকেট বাংলাদেশের জন্য।
এরপর এক এক করে সাজঘরে ফিরেন গুনারাত্নে (৭), সিলভা (০) এবং ডিকভেলা (৫)। কলম্বো টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৩৯ রান করা দিনেশ চান্দিমালকে এবার আর বাড়তে দেননি মোস্তাফিজুর রহমান। ব্যক্তিগত ৫ রানের মাথায় মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ এক ক্যাচের শিকার হয়ে বিদায় নেন চান্দিমাল।
দারুণ বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও এক পাশে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান এ ওপেনার। শুধু কি দেয়াল? সমানে রানও করে যাচ্ছিলেন তিনি।
কিছুতেই তাকে ফেরানো যাচ্ছিলো না। অনেক সাধানার পর অবেশেষে ‘ডেঞ্জারম্যান’ করুণারত্নে আউট করেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের দারুণ এক আউট সুয়িং বল ঠিকমত খেলতে না পেরে স্লিপে ক্যাচ দেন করুণা।সেই ক্যাচ নিতে এতটুকু ভুল হয়নি সৌম্যের।
আউট হবার আগে অবশ্য কাজের কাজটি করে গেছেন করুণারত্নে।খেলেছেন ১২৬ রানের অসাধারণ ইনিংস। এরপর হেরাথকে ৯ রানে বিদায় করেন তাইজুল।
তবে বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান উইকেট কিপার দিলরুয়ান পেরেরা। প্রথমে হেরাথের সঙ্গে মূল্যবান ২২ রানের জুটির পর লাকমলকে সঙ্গে নিয়ে তুলে রান।
বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ও সাকিব তিনটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা ৩৩৮ ও ২৬৮/৮( করণারত্নে ১২৬, থারাঙ্গা ২৬, মেন্ডিস ৩৬, চান্ডিমাল ৫, গুণারত্নে ৭, ডি সিলভা ০, ডিকওয়েলা ৫, পেরেরা ব্যাটিং ২৬ , হেরাথ ৯, লাকমাল ব্যাটিং ১৬; মোস্তাফিজ ৩/৫২, সাকিব ৩/৬১, তাইজুল ১/৩১, মিরাজ ১/৬৭)
বাংলাদেশ : প্রথম ইনিংস ৪৬৭/১০
শনিবার টেস্টের পঞ্চম দিন।