টেকনাফে রবিশস্য চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন,কক্সবাজার::কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ। এক সময় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শাক-সবজি, তরি-তরকারি এনে টেকনাফের চাহিদা মেটানো হতো। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি এখন আর নেই। উপজেলায় ১ হাজার ৮’শত ১৯ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রবি শস্য চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে নতুন ফসল হিসেবে ৮ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ করে সফল হয়েছে কৃষকরা। পাশাপাশি অন্যান্য রবিশস্য চাষেও লাভবান হয়েছেন কৃষককুল। পাশাপাশি উপজেলাবাসির চাহিদা মিটিয়ে এখন বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন কাচা তরকারি সরবরাহ দেয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকূল, কৃষি উপকরণ সহজলভ্য ও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগীতায় কৃষকরা সাফল্যের মুখ দেখেছে বলে জানা গেছে। এবছর ৫৬০ হেক্টর জমিতে পান চাষ করেছে টেকনাফ উপজেলার কৃষকরা। এর পরে রয়েছে মরিচ ও ভূট্টা চাষ। ৪১০ হেক্টর জমিতে এই দূই ফসলের চাষ করা হয়।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটি গ্রামে বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদন করা হয়েছে। এরমধ্যে চলতি বছর প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, সাংবারং ও টেকনাফ সদর ইউনিয়নে বেশ কিছু চাষী নতুন ফসল হিসেবে বাদাম চাষ করে সফলতা পেয়েছে।
এছাড়া মুলা, লাল শাক, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাধাকপি, সীম, লাউ, বরবটি, ঢেড়স, মিস্টি কুমড়া, করলা, ফ্রান্সবিন, পালংশাক, আলু, মিষ্টি আলু, আখ, ফেলন, পিঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, তরমুজ, খিরা ও বাঙ্গী চাষ করে ভাগ্য বদল হয়েছে কৃষকদের। চাষীরা স্থানীয়দের চাহিদা পূরন করে জেলার বাহিরেও সরবরাহ দিতে সক্ষম হয়েছে। এখনো অনেক রবি শস্য ক্ষেতে রয়ে গেছে।
টেকনাফের নতুন পল্লান পাড়ার মোঃ ওসমান গণি জানান, কৃষি অফিসের দিক নির্দেশনায় তিনি ৪০ শতক জমিতে বাধা কপির চাষ করেন। এতে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেছে। তিনি আরো জানান, নিবীড় পরিচর্যা, কৃষি উপকরণ সহজভাবে পাওয়া এবং উপ-সহকারি কৃষি অফিসারদের সঠিক পরার্ম্পশের কারণে রবি শস্য চাষে লাভবান হয়েছেন। তিনি আগামী বছর আরো বেশী জমিতে বাধা কপি চাষের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তার মতো অনেক চাষী বাধা কপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া এলাকার মোঃ ইসলাম জানান, তিনি ১২০ শতক জমিতে শুধু টমেটো চাষ করেছে। ফলন হয়েছে প্রচুর। টমেটো তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। বাজারে টমেটোর প্রচুর চাহিদা থাকায় দামও বেশ পাওয়া যাচ্ছে। এক কেজি টমেটোর দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এই দাম অব্যাহত থাকলে ওই জমি থেকেই প্রায় ৮ লক্ষ টাকার অধিক টমেটো বিক্রি করতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শফিউল আলম কুতুবী জানান, টেকনাফের মাটিতে যেকোন শস্য চাষের জন্য অত্যন্ত ভাল ও উপযোগী। এবছর আবহাওয়া অনুকুল থাকায় প্রতিটি ফসল ভাল ফলন হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হিসেবে পেয়েছে। এছাড়া কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদেরকে কারিগরি সহযোগীতা দেয়ার ফলে কৃষকরা উৎপাদন ভাল করতে পেরেছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.