প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে বহুল আলোচিত তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তবে তিনি জানিয়েছেন, ভারত এই চুক্তির ব্যাপারে আন্তরিক। বাংলাদেশ আশা করছে এবার না হলেও পরবর্তী সময়ে এই চুক্তি সম্পাদিত হবে।

মঙ্গলবার ঢাকায় এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এই কথা বলেন। আগামীকাল বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে এই গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়।

দৈনিক ভোরের কাগজ এবং অ্যান্ড ওয়াটার পোভার্টি, ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকশন নেটওয়ার্ক, সাউথ এশিয়া বাংলাদেশ, এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেল্থ এবং ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন কলাবোরেশন কাউন্সিল যৌথভাবে এই গোলটেবিলের আয়োজন করে।

এর আগে গত বুধবার নোয়াখালীতে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরেই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হবে। এই চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত যেসব সমস্যা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে, তার একটি তিস্তার পানিবণ্টন। ভারত এই নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করায় উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রামে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নদীতে পানি না থাকায় দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজও প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের বিরাট এলাকায় চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটছে।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংএর ঢাকা সফরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আপত্তিতে আটকে যায় সে চুক্তি। মমতার দাবি, বাংলাদেশকে কেন্দ্রীয় সরকার যত পানি দেয়ার কথা বলছে, তত পরিমাণ পানি তিস্তায় আসে না। পশ্চিমবঙ্গের উজানে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় পশ্চিমবঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এরপর গত সাড়ে পাঁচ বছরে তিস্তার পানিবণ্টর চুক্তি নিয়ে পর্দার আড়ালে অনেক চেষ্টাই হচ্ছে। আর এই চেষ্টার ফল মেলার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। আগামী ৭ এপ্রিল চার দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮ এপ্রিল তিনি সে দেশের সরকার প্রধান নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

তিস্তা চুক্তি হলে ২০১১ সালে মমতা সে সময়ের কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছিলেন। আর মমতা সমর্থন তুলে নিলে তখন সরকারের পতন ঘটতো। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এখন মমতা আর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

তবে পানিসম্পদ মন্ত্রী জানালেন এখনো ভারতের সমস্যা কাটেনি। তিনি বলেন, ‘তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারতের আগের দুই প্রধানমন্ত্রী যেমন আন্তরিক ছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও তেমন আন্তরিক। তবে তাদের কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। আমরা আশা করতে পারি, সেসব সমস্যার সমাধানের পর চুক্তিটি করতে পারবো।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.