৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ লাখ বৈদ্যুতিক খুঁটি কিনবে সরকার

0

সিটিনিউজবিডি  :   পল্লী বিদ্যুতায়নে চারটি ক্রয় প্রস্তাবের বিপরীতে পৌনে ২ লাখেরও বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি (এসপিসি পোল) কিনছে সরকার। এ খুঁটিগুলো কিনতে মোট ব্যয় হবে ৩৮৮ কোটি টাকা।

সচিবালয়ে রবিবার ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ক্রয় কমিটির বৈঠকে মোট ৭টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়নের আওতায় ৪ হাজার ১৯০টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ও ৭ হাজার ৩৭৫ কিলোমিটার কন্ডাক্টর এসিএসআর বেয়ার ক্রয় এবং স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১৪ তলা বিশিষ্ট ৫টি বহুতল ভবন নির্মাণের দর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ৫০০ বর্গফুট বিশিষ্ট এ ৫টি ভবনে মোট ফ্ল্যাট সংখ্যা হচ্ছে ৫২০টি।

ক্রয় প্রস্তাব অনুযায়ী, বৈদ্যুতিক খুঁটি (এসপিসি পোল) ক্রয়ের চারটি প্রস্তাবে মোট খুঁটির সংখ্যার হচ্ছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৪২৩টি।

এরমধ্যে খুলনা বিভাগের ‘পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ কর্মসূচি-২’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর কেডিপি-২-জি-৭-এর আওতায় তিনটি লটে ২৮ হাজার ৫৬৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয় করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। প্রতিটি লটে খুঁটির সংখ্যা হচ্ছে ৯ হাজার ৫২১টি। তিনটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান এ সব খুঁটি সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠান তিনটি হচ্ছে, ‘মেসার্স চরকা এসপিসি পোল লিমিটেড’, ‘মেসার্স পোলস এ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড’ ও ‘মেসার্স কনটেক কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।

একই প্রকল্পের বিপরীতে চট্রগ্রাম-সিলেট বিভাগের সিএসডিপি-২-জি-১৮ প্যাকেজের জন্য ২টি লটে মোট ৫৯ হাজার ১৬২টি এসপিসি খুঁটি ক্রয় করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ১২৪ কোটি ১৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। দুটি প্রতিষ্ঠান এ খুঁটি সরবরাহের কাজ পেয়েছে। এরমধ্যে ‘ইলেক্ট্রাপ্যাক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড’ সরবরাহ করবে ৩০ হাজার খুঁটি এবং ‘টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড’ সরবরাহ করবে বাকি ২৯ হাজার ১৬২টি খুঁটি।

বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয়ের তৃতীয় প্রস্তাবটি হচ্ছে, ঢাকা বিভাগের ‘পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ কর্মসূচী-২’-এর আওতায় প্যাকেজ নম্বর ডিডিপি-২-জি-১৮-এর বিপরীতে ২টি লটে মোট ৫২ হাজার ৮৪৬টি এসপিসি বিদ্যুৎ খুঁটি ক্রয় করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ১১০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ২৬ হাজার ৪২৩টি করে এ খুঁটি সরবরাহ করবে ‘মেসার্স দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’ ও ‘মেসার্স রয়্যাল গ্রীন প্রোডাক্ট’।

বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয়ের চতুর্থ প্রস্তাবটি হচ্ছে, ‘রাজশাহী-রংপুর বিভাগের পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ কর্মসূচী-২’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪৪ হাজার ৮৫২টি এসপিসি বিদ্যুৎ খুঁটি ক্রয়। এ জন্য ব্যয় হবে ৯৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। দুটি লটে ২২ হাজার ৪২৬টি করে এ খুঁটি সরবরাহ করবে ‘মেসার্স জেমকন লিমিটেড’ ও ‘মেসার্স কনটেক কন্সট্রাকশন লিমিটেড’।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়নের আওতায় আরও দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি।

এর মধ্যে চট্রগ্রাম-সিলেট বিভাগের সিএসডিপি-২-জি-১২ প্যাকেজের জন্য ৪ হাজার ১৯০টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয় করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ৩৪ কোটি ৫৯ লাখ ৩১ হাজার টাকা। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘টেকনো ভেঞ্চার লিমিটেড’-এ ট্রান্সফরমারগুলো সরবরাহ করবে। ক্রয় প্রস্তাবে দেখা যায়, প্রাক্কলিত ব্যয়ে তুলনায় ২২ দশমিক ২৪ শতাংশ অধিক ব্যয়ে ট্রান্সফরমারগুলো ক্রয় করা হচ্ছে।

অন্য প্রস্তাবটি হচ্ছে, ‘পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ চট্রগ্রাম-সিলেট বিভাগের কার্যক্রম-২’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর সিএসডিপি-২-জি-৯-এর বিপরীতে ৭ হাজার ৩৭৫ কিলোমিটার কন্ডাক্টর, এসিএসআর, বেয়ার ক্রয়। এ জন্য ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৪২ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এটি সরবরাহ করবে ‘মেসার্স এসবিএস কেবল্স লিমিটেড’।

স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ফ্ল্যাট

ঢাকার মিরপুরের ৯নং সেকশনে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১৪ তলাবিশিষ্ট ৫টি বহুতল ভবন নির্মাণের দর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রকল্পের আওতায় ১০টি ভবনের মধ্যে প্রথম পাঁচটি ভবন এবার নির্মাণ করা হবে। ১ হাজার ৫০০ বর্গফুটবিশিষ্ট একটি বেজমেন্টসহ এ ৫টি ভবনে মোট ফ্ল্যাট সংখ্যা হচ্ছে ৫২০টি। প্রতিটি ভবনে ফ্ল্যাট সংখ্যা ১০৪টি। এতে মোট ব্যয় হবে ২৭২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, ৫টি ভবন নির্মাণে সর্বনিম্ন দরদাতা ৫টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— মো. নুর হোসেন (জেভি), ‘টিইএএল-টিবিএল কনসোর্টিয়াম’, দেশ উন্নয়ন লিমিটেড-দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স (জেভি)’ একটি করে ভবন এবং পিবিএল-পিএইএল (জেভি) ২টি ভবন নির্মাণ করবে।

অতিরিক্ত সচিব জানান, ক্রয় কমিটির বৈঠকের আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি হচ্ছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ‘খুলনা জেলার ভূতিয়ার বিল এবং বর্ণাল-সলিমপুর-কোলাবাসুখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিষ্কাশন প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪৯ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ও ৮ ভেন্ট ড্রেনেজ রেগুলেটর (ছাগলাদহের কাছে আঠারোবাকি নদীতে) নির্মাণ কাজটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট লিমিটেড বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.