শীর্ষ মহলের হস্তক্ষেপে বন্ধ হচ্ছে না ব্যাংকের দুর্নীতি

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে ব্যাংকিং খাতে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম প্রসাদ দাস বক্তব্য রাখেন। মূল গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন ছিদ্দিকী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ব্যাংকিং খাতের বেশ কিছু জায়গায় সুশাসন না থাকায় অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। এ খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিপালন যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন থাকবে না। ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্ল­ায়েন্স ডিপার্টমেন্ট (আইসিসিডি) ব্যাংকিং খাতের তৃতীয় নয়ন হিসেবে কাজ করে। তাই আইসিসিডিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

আইসিসিডির দুর্বলতা কারণে অনিয়ম হচ্ছে উল্লে­খ করে ডেপুটি গভর্নর বলেন, সুশাসনের অভাবে ব্যাংকের শাখা থেকে ডিপোজিটরদের ২ হাজার কোটি টাকা প্রধান শাখায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার অনেক সময় দেখা যায়- ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বাইরের লোকজন এসে পর্ষদ সভা করছে। এগুলো ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো খবর নয়। এভাবে চলতে থাকলে ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হবে না। নিজ নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ব্যবস্থাপকদের নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাছাড়া অডিট ও আইসিসিডি ডিভিশনকেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সুপারভিশনের জন্য লোকবল কম উল্লেখ করে ডেপুটি গভর্নর আরও বলেন, সুপারভিশনের জন্য লোকবল মাত্র ৭৫০ থেকে ৮০০ জন। কিন্তু সারাদেশে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা রয়েছে সাড়ে ১২ হাজার। তাই লোকবলের অভাবে সব ধরনের সুপারভিশনে কিছু কিছু দুর্বলতা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, গত ছয় বছরের বেশি সময় ধরে বিআইবিএম অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিপালনের ওপর কর্মশালা করে আসছে। ব্যাংকিং খাতের গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিতে ব্যাংকারদের আগ্রহ বাড়ছে।

ব্যাংকের আইসিসিডিকে ‘ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার’ এই প্রবাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন হেলাল আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এভাবে কোনো পরিদর্শক বা নিয়ন্ত্রক দল হতে পারে না। এমন অবস্থার পরিবর্তন না হলে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। তিনি বলেন, ব্যাংকারদের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এটি করতে না পারলে ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম রোধ করা কঠিন হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.