সিটিনিউজবিডি : কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগের চেয়ে অনেক বেশি নতুন টাকা ঈদের আগে ছাড়লেও টাকা নিতে গেলে একটু ঘাম ঝরাতেই হয়। প্রচণ্ড ভিড়, দীর্ঘ লাইন, তারপর অকস্মাৎ কাউন্টারে টাকা ফুরিয়ে যাওয়াসহ বেশ কিছু ঝক্কি-ঝামেলা তো রয়েছেই। যে কারণেই অনেকে রাস্তায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে নতুন টাকা কেনেন। নতুন টাকার দাম বেড়েছে। ছোটদের প্রতিও অনুরোধ তারা যেন মুরব্বিদের প্রতি একটু সদয় হও।
সমপরিমাণ টাকার চেয়ে কিছু টাকা বাড়তি দিয়েই পাওয়া যায় নতুন টাকা। এর জন্য ঢাকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বটতলা ও গুলিস্তান জায়গা দুটি বেশ জনপ্রিয়। তবে রমজানের আগে বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এবার নতুন টাকার দামও বেড়েছে কিছুটা। ২, ৫, ১০ ও ২০ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে গত বছরের চেয়ে বেশি দরে। প্রতি বান্ডেলে থাকে একশটি নোট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে টাকা বিক্রেতাদের একজন আলেয়া বেগম। গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে তিনি টাকা বিক্রি করছিলেন। তাকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, ক্রেতাদের ভিড়, টাকা যেমন দেদারসে বিক্রি করছেন তেমনি কেনার জন্যও ছটফট করছেন। কারণ নিমিষেই ফুরিয়ে আসছে হাতের টাকা।
এ বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, ২ টাকার প্রতি বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা বেশি দরে, ৫ ও ১০ টাকার প্রতি বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা বেশিতে, ২০ টাকার বান্ডেলে অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা, ৫০ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা বেশিতে। আর গত রমজানের ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ২ টাকার বান্ডেল ৩৫-৫০ টাকা বেশিতে, ৫ টাকার বান্ডেল ৫৫-৭০ টাকায়, ১০ টাকার বান্ডেল ৯০-১১০ টাকায়, ২০ টাকার বান্ডেল ১৪০-১৬০ টাকা বেশিতে এবং ৫০ টাকার নোটের বান্ডিল বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকা বেশিতে।
শামসুল হক নামের এক ক্রেতা জানালেন, সময় বাঁচাতে ও ভিড় এড়াতেই বাইরে থেকে টাকা কিনছেন তিনি।
বাইরে টাকা বিক্রি যাতে না হয় সেজন্য প্রতি ঈদের আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এখানে পুলিশ নিজে বরং বিক্রেতাদের সহায়তা করে- এমন অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিএমডি মো. হাবিবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘আসলে আমাদের সচেতনতা বাড়ানো নিয়ে কাজ করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। কারণ আমরা প্রতিটা ঈদের আগেই আইনশৃঙ্খলা বহিনীর কাছে বাড়তি নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিই। রাস্তায় যাতে টাকা বিক্রি না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ করা হয় এ চিঠিতে। কিন্তু ফলাফল বরাবরেই মতই; অপরিবর্তনশীল।’
উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঈদ উপলক্ষে নতুন ২২ কোটি টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে প্রধান কার্যালয়ে একটি ভিআইপিসহ মোট তিনটি কাউন্টারে নতুন নোট বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২০টি শাখার মাধ্যমে নতুন নোট ও কয়েন বিতরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১২টি শাখায় ১ থেকে ৫০ টাকার নোট ও কয়েন এবং বাকি ৮টি শাখায় ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বিতরণ করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ নতুন টাকা নিতে পারেন ৯ হাজার ৫০০ টাকা।