নিজস্ব প্রতিবেদক:: শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে একটি সু-নির্দ্দিষ্ট বিধানের মধ্যে আনার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি ২০১৭ প্রনয়ণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সোমবার (৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে প্রণীত শিক্ষা নীতিমালা তুলে ধরেন মেয়র।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভিশন ও রূপকল্প সামনে রেখে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার ভিত্তিতে পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।তারই ধারাবাহিকতায় মানব সম্পদকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহারে লক্ষে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১৭ এর আলোকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্কুল ও কলেজ সমূহকে একটি নীতিমালার আওতায় আনায়নের লক্ষে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চট্টগ্রামের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়ুয়াকে আহবায়ক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা, সরকারের উপ সচিব মিসেস নাজিয়া শিরিনকে সদস্য সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের বিদ্যালয় পরিদর্শক কাজী নাজিমুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, বিজয় স্মরনী কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এবং জেলা শিক্ষা অফিস চট্টগ্রামের মেট্রো লিয়াজোঁ অফিসার এস মোস্তফা আলম সরকারকে সদস্য করে শিক্ষা নীতি প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়।
এ কমিটি জাতীয় শিক্ষা নীতি সহ শিক্ষা সংক্রান্ত নানা মাধ্যমের সহযোগিতায় প্রায় ৬ মাস নিরলস পরিশ্রম করে ১১৪ পৃষ্ঠার খসড়া নীতিমালা তৈরি করে। এ নীতিমালা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী কমিটি ও সাধারণ সভায় এবং অনলাইনে আলোচনা, সমালোচনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৩ এপ্রিল ২০১৭ খ্রি. তারিখে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ভারত উপমহাদেশের প্রাচীন পৌরসভার মধ্যে অন্যতম। এ সিটি কর্পোরেশন শিক্ষা বিস্তারে সমগ্র বাংলাদেশে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের পাশা-পাশি চট্টগ্রাম নগরীর নাগরিকদের সন্তানদের শিক্ষার স্বার্থে ১৯২৭ সাল থেকে সিটি কর্পোরেশন শিক্ষা বিস্তারে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
মেয়র বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের সিটি কর্পোরেশনের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় কিছুটা বিশৃংখলা ছিল বিশেষ করে চসিক শিক্ষা বিভাগের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য, টাইম স্কেল সমস্যা, পদোন্নতি,স্থায়ী করন, জৈষ্ঠতা ইত্যাদি সহ নানা ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা যায়।
এ থেকে পরিত্রানের লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে একটি সু-নির্দ্দিষ্ট বিধানের মধ্যে আনার লক্ষে এ শিক্ষানীতি প্রনয়ণ করা হয়েছে। মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ১১৪ পৃষ্ঠার এই নীতিমালায় স্থানীয় সরকার কর্তৃক প্রণীত স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান বিধি (লোকাল কাউন্সিল সার্ভিস রুলস্ ১৯৬৮), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ২০১০ সালের শিক্ষা নীতি ও অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলের সাথে সমন্বয় করে শিক্ষক কর্মচারীদের ন্যায্য দাবী,আইন সঙ্গত যৌক্তিক প্রস্তাবনা, সরকারী বিধি বিধান ও নীতির সাথে সামঞ্জস্য সাধনের মধ্য দিয়ে প্রণীত শিক্ষা নীতিমালা প্রয়োজনে সংযোজন ও বিয়োজনের মাধ্যমে সংশোধন সাপেক্ষে গ্রহণ করা হয়।
প্রথম বারের মত প্রণীত এই নীতিমালা ১ জুলাই ২০১৭ থেকে কার্যকর হবে। প্রসঙ্গক্রমে মেয়র বলেন, এই নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বিদ্যমান বেতন বৈষম্য দূরিকরণ ও সমতা বিধান, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড,পদোন্নতি, অস্থায়ী শিক্ষক কর্মকচারীদের স্থায়ী করন সহ বিদ্যালয় সমূহের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন পদে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহবায়ক সুমন বড়–য়া, সদস্য সচিব মিসেস নাজিয়া শিরিন, সদস্য কাজী নাজিমুল ইসলাম, কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, মো. জাহাঙ্গীর, এস মোস্তফা আলম সরকার সহ শিক্ষা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন সহ শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ।