ইলিশের গায়ে বৈশাখি হাওয়া

0

সিটিনউজ ডেস্ক:: বৈশাখ আসতে আরও সপ্তাহখানেক বাকি! তবে এর মধ্যেই বাজারে নিত্যপণ্যে ছোঁয়া লেগেছে বৈশাখের। ইলিশের গায়ে যেনো একটু ‘বাতাস’ বেশি-ই লেগেছে।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাঙালির পাতের ইলিশের দাম বেড়েছে প্রায় এক থেকে দেড় গুণ। বাড়তির দিকে মৌসুমী শাক-সবজি, চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামেও।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের এ বাজার দর পাওয়া গেছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এমনিতেই বাজারে একটু ভিড় বেশি-ই। তার উপর সামনে পহেলা বৈশাখ। বাঙালির প্রাণের উৎসব ‘নববর্ষ’ উদযাপনকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দামে চড়া ভাব দেখা গেছে।

ক্রেতাদের দাবি, কোনো উৎসব এলেই বাজারে পণ্যের দাম লাগাম ছাড়া হয়ে যায়। বাঙালির উৎসবকে পুঁজিকরে মাছ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সবাই ফায়দা নেয়।

সকালে মিরপুরের বিভিন্ন কয়েক’টি কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশ মাছ এক থেকে দেড় গুণ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

এক কেজির কম ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়, আর ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ। গত সপ্তাহে এ দাম দুই কিংবা ১২শ’র বেশি ছিলো না।

এছাড়া ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬-৭০০ টাকা ও ছোট ইলিশ ২৫০- ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা বলেন, বাজারে ইলিশের ঘাটতি নেই। এরমধ্যে মিয়ানমার থেকেও প্রচুর ইলিশ এসেছে। দাম এতোদিন ধরে স্থিতিশীলই ছিলো কিন্তু বৈশাখ উপলক্ষে একটু বেড়ে গেছে।

মাছ ব্যবসায়ী হাসেন আলী  বলেন, ‘বাজারে ইলিশের চাহিদা বেড়েছে। অনেকে বৈশাখের উৎসব আয়োজনে আগেভাগেই বেশি করে ইলিশ কিনে রাখছেন। এ কারণে ইলিশ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।’

এদিকে মৌসুম শেষ হওয়ার অজুহাতে বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। সব কিছুই বাড়তির দিকে। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

মিরপুর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা মাসুম হোসেন বলেন, শীত মৌসুম শেষ। পাইকারী বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে মহাজনরা। এজন্য গতসপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৭৫ টাকা। লাউ প্রতি পিসে কমপক্ষে ৫ টাকা বেড়েছে।

এখন প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩৫ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০- ৪০ টাকা এবং বাঁধাকপি ৩০ টাকা।

বেগুন প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে, পেঁয়াজের কলি ২০ টাকা, চাল কুমড়া ২০-২৫ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা,পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা,করলা ৪০ টাকা, কাকরোল ৪০ টাকা, আলুর দাম ২ টাকা বেড়ে ২০ টাকা কেজি, প্রতি হালি লেবু প্রকারভেদে ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২৭-৩০ টাকা, ভারতীয় ২০-২৫ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৯০ টাকা, দেশি আদা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর গরুর মাংসের দাম না বাড়লেও বেড়েছে মুরগির মাংসের দাম। বাজারে গরুর মাংস কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ৫ টাকা করে বেড়ে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা। আর ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস।

এদিকে চালের দাম যেনো লাগাম ছাড়া। গত এক সপ্তাহে মানভেদে প্রতিকেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। তবে ভোজ্যতেল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.