এম রমজান আলী,রাউজান (চট্টগ্রাম)::হালদা নদীতে মা মাছ যে কোনো সময় ডিম দেয়ার সম্ভাবনার মাঝেও মৎস্য বিভাগের প্রস্তুতি নেই নদীর সুরক্ষায়। প্রস্তুতি নেই নদী পাড়ের হ্যাচারী লো।এখন থেকেই হালদায় নৌকা জাল নিয়ে ডিম সংগ্রহকারীদের অধীর অপেক্ষা।এই সময়েও নদীতে দেখা গেছে ছোট বড় যান্ত্রিক নৌযানের যাওয়া আসার দৃশ্য। পাতা হচ্ছে জাল ফলে মা মাছের অবাদ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কমছে না বালু উত্তোলনকারীদের তৎপরতা। সারানো হয়নি মৎস্য বিভাগের অধীনস্থ রাউজানের দুটি হ্যাচারীর আগের ত্র“টি। দুটি হ্যাচারীর পানির পাইপ লাইন, ডিম ফুটানোর কুপ গুলোর বেশির ভাগ নষ্ট।
হালদা পাড়ের মৎস্যজীবিদের অভিযোগ প্রাকৃতিক এই মৎস্য ভাণ্ডার রক্ষায় কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার এটিই বাস্তব চিত্র। মৎস্যজীীবরা মা মাছ ডিম দেয়ার এই সময়ে নদীতে নৌযানের উৎপাত বন্ধে ও হ্যাচারী সমূহ কার্যকর না করার জন্য মৎস্য বিভাগের লোকজনকে দায়ি করেছে। নদী পাড়ের বাসিন্দা এস এম মুজিব জানিয়েছেন নদীতে মা মাছ ডিম দিতে পারে এমন পরিবেশ গত মঙ্গলবার(৪ এপ্রিল) থেকে বিরাজমান রয়েছে। চলমান আছে থেমে থেমে দমকা হাওয়া সাথে বজ্রবৃষ্টি। ডিম দেয়ার অনুকুল পরিবেশ দেখে নৌকা জাল নিয়ে অনেক মৎস্যজীীব নদীতে অপেক্ষায় আছে। প্রায় দুই’শ নৌকা নিয়ে তারা অবস্থান করছে মাছের ডিম সংগ্রহ করার আশায়। নদীতে অপেক্ষমান মৎস্যজীবিদের মধ্যে অনেকেই অভিযোগ করেছেন ডিম দেয়ার এমন পরিবেশেও নদীতে চলাচল করছে ছোট বড় যান্ত্রিক নৌযান। এসব নৌযানের ডুবন্ত পাখার আঘাতে মা মাছ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা আগেও বিভিন্ন সময় ঘটেছে। আইনে বলা আছে এই সময়ে হালদায় যান্ত্রিক নৌযান বন্ধ রাখার। যদিও এই আইন প্রয়োগ হয় কদাচিৎ কোনো সময়। ডিম সংগ্রহকারী মৎস্যজীবিরা বলেছেন রাউজানের দুটি মৎস্য হ্যাচারী প্রায় অকার্যকর। হ্যাচারী দুটিতে যে পরিমান ডিম ফুটানোর ব্যবস্থা রেখে নির্মাণ করা হয়েছিল, জন্মলগ্ন থেকে এই পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ সুফল পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষ হ্যাচারী সমূহের উন্নয়নে মনোযোগি নয়।
গত প্রায় তিন বছর থেকে দুটি হ্যাচারীর কয়েকটি পানি ট্রাঙ্ক ও পাইপ লাইন অকেজো হয়ে আছে। কোটি টাকায় নির্মিত হ্যাচারী দুটি থেকে স্বল্প পরিসরে এখানে সামান্য ডিম ফুটানো সম্ভব হয়। সংগ্রহকারীরা বেশির ভাগ ডিম ফুটাতে হয় সেই মান্দাতার আমলের মাটির কুপে। এই পদ্ধতিতে ডিম ফুটাতে গিয়ে সংগৃহিত ডিমের বড় একটি অংশ নষ্ট হয়ে যায়।
নদী এলাকার পরিদর্শনে দেখা যায়, বড় একটি ড্রেজারবাহী নৌযান হালদার মার্দশা এলাকার উপর দিয়ে উত্তরমুখি যাচ্ছে। এলাকার মানুষের কাছে জানা যায় ওই ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উঠানো হয় নদী থেকে। মা মাছ ডিম দেয়ার এই সময়ে নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচলসহ হ্যাচারী সমূহের দুদর্শার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে জাল নৌকা ধরা হয়। নিজস্ব জনবলের অভাবে ইচ্ছে থাকলেও সব সময় নদীতে অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। হ্যাচারী গুলোর দুদর্শা প্রসঙ্গে বলেন এই খাতে কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে এগুলো পুর্ণাঙ্গ ভাবে কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না।