বাঁশখালীতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত

0

বাঁশখালী প্রতিনিধি::আগামী ১৬ এপ্রিল বাঁশখালীর ১৪টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এটি নির্বাচন অফিসের দেওয়া তথ্য অনুসারে হলেও সরল ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন সরলের বর্তমান চেয়ারম্যান লেয়াকত আলী তালুকদার।

তবে এ নিয়ে কোনরূপ মন্তব্য করতে পারেন নির্বাচনী দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। যা-ই হোক দীর্ঘ প্রতিক্ষা শেষে ১৬ এপ্রিল ঘোষিত নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করার সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন অফিস।

এদিকে শনিবার(৮ এপ্রিল) ১৪টি ইউনিয়নের নির্বাচনে দায়িত্বরত ১৩৫ জন প্রিসাইডিং এবং ৭৫৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

রোববার (৯ এপ্রিল) ১৫১২জন পোলিং অফিসারকে ২ ভাগে ভাগ করে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। আর বিকালে আলাওল ডিগ্রী কলেজ হলরুমে প্রার্থীদের নিয়ে আইনশৃংখলা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। একদিকে নানা ধরনের গুজব, অপরদিকে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচনের সকল ধরনের প্রস্তুতি। এর মধ্যেও প্রার্থীরা নিজেদের সকল শক্তি প্রয়োগ করে বর্তমানে মাঠে রয়েছে নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করতে। অপরদিকে বেশ কয়েকজন প্রার্থী গাঁ সাড়া ভাবে প্রচার-প্রচারণা থেকে দূরে রয়েছে। তবে এবার নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামাতের প্রার্থীরা নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। কেউ কাউকে ছাড় দিবে না। এটাই তাদের বক্তব্য।

অপরদিকে নির্বাচন শতভাগ নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হবে বলে প্রশাসনের অভিমত। দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁশখালীর নির্বাচন বন্ধ থাকায় প্রার্থীরা নানা ভাবে ক্ষোভ ঝাড়লেও একটি গ্রুপ বার বার নির্বাচন বন্ধ রাখতে বিভিন্ন ভাবে মামলা মোকদ্দমা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মতে বর্তমানে নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে তাদের বিজয় অনেকটা অনিশ্চিত হওয়ায় তারা মামলা করে নির্বাচন স্থগিত রাখার পথ বেছে নিয়েছে বলে বেশ কয়েকজন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা নামপ্রকাশ না করা শর্তে জানান।

সরল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ লেয়াকত আলী তালুকদার জানান, তিনি বর্তমানে নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন। যার প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত হতে পারে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, আরো বেশ কয়েকজন রিট করছেন যা আগামী সোমবার জানা যাবে। লেয়াকত আলী তালুকদারের পক্ষে রিট পিটিশন ৪৫৩১/২০১৭ মূলে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের আদালতে নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেছে বলে জানালেও বাঁশখালী নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ধরনের কোন আদেশ আসেনি বলে জানান তিনি।

এদিকে গন্ডামারা ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৫৯টি বুথে ২১ হাজার ৩৪৮ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে এম. এ মালেক মানিক (আনারস), নুরুল মোস্তফা সংগ্রাম (নৌকা), লেয়াকত আলী (ধানের শীষ), হারুনুর রশীদ তালুকদার (চশমা), শফকত হোসাইন চাটগামী (হাতপাখা), মুরাদুল ইসলাম (টেবিল ফ্যান), মোঃ আরিফুল্লাহ (মোটর সাইকেল), মোঃ ইকবাল হোসেন (অটোরিক্সা), মোঃ সেলিম উল্লাহ (টেলিফোন), এখানে সংরক্ষিত আসনে ১৪ জন এবং সাধারণ আসনে ৬০ জন প্রার্থী রয়েছে। খানখানাবাদ ইউনিয়নে ১১টি কেন্দ্রে ৫৫টি বুথে ১৯ হাজার ৫৩১ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, মোঃ বদরদ্দীন চৌধুরী (নৌকা), গাজী জাহেদ আকবর (মোটর সাইকেল), মোঃ আক্তার ফারুখ (ধানের শীষ), মোঃ ফরিদুল আলম (আনারস), মোঃ ফোরকান চৌধুরী (অটোরিক্সা), এখানে সংরক্ষিত আসনে ৯ জন এবং সাধারণ আসনে ২ জন প্রার্থী রয়েছে। ছনুয়া ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৫০টি বুথে ১৭ হাজার ৭১৪ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।

চেয়ারম্যান পদে রেজাউল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), এম. জিল্লুল করিম শরীফি (নৌকা), এম. হারুনুর রশীদ (মোটর সাইকেল), মোঃ আদম (আনারস), মোঃ আলমগীর কবির (ঘোড়া)। এখানে সংরক্ষিত মহিলা পদে ১০ জন এবং সাধারণ আসনে ৪৭ জন প্রার্থী রয়েছে। পুঁইছড়ি ইউনিয়নে ১২ টি কেন্দ্রে ৬৭টি বুথে ২৩ হাজার ৬৪৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে সোলতান গণি চৌধুরী (নৌকা), সোলতানুল আজিম চৌধুরী (ধানের শীষ), জসীম উদ্দিন চৌধুরী (রজনীগন্ধা), মোঃ সোলাইমান (ঢোল), কফিল উদ্দিন চৌধুরী (চশমা), ইয়াছিন আরাফাত গণি চৌধুরী (মোটর সাইকেল, এখানে সংরক্ষিত আসনে ৮ জন এবং সাধারণ আসনে ৩০ জন প্রার্থী রয়েছে। চাম্বলে ১০টি কেন্দ্রে ৬৬টি বুথে ২৩ হাজার ২৮৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এতে চেয়ারম্যান পদে মুজিবুল হক চৌধুরী (নৌকা), নুর মোহাম্মদ ওসমান গণি (ধানের শীষ), আলী নেওয়াজ চৌধুরী ইরান (অটোরিক্সা), মোঃ জকরিয়া (হাতপাখা), আবদুল মান্নান (দুটি পাখা), এখানে সংরক্ষিত আসনে ১০ জন, সাধারণ আসনে ৪৩ জন প্রার্থী রয়েছে। শেখেরখীল ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৪০টি বুথে ১৩ হাজার ৯২৮ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে মাওলানা হামেদ হাছান (আনারস), মোঃ ইয়াছিন (নৌকা), সাইফুল ইসলাম (চশমা), এখানে সংরক্ষিত ৭ জন, সাধারণ আসনে ৩৯ জন প্রার্থী রয়েছে। শীলকূপ ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৪৪টি বুথে ১৫ হাজার ১৬৭ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে মোজাম্মেল হক সিকদার (নৌকা), মোঃ মহসিন (ধানের শীষ), আবদুল্লাহ আল রেজা (চেয়ার), হাজী অছিউর রহমান (লাঙ্গল), শফি আলম (আনারস), এখানে সংরক্ষিত আসনে ৯ জন, সাধারণ আসনে ২৭ জন প্রার্থী রয়েছে। বৈলছড়ি ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৩৭টি বুথে ১২ হাজার ১০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এতে চেয়ারম্যান পদে কফিল উদ্দিন চৌধুরী (নৌকা), মোঃ ইব্রাহিম খলিল (ধানের শীষ), মোঃ ইউসুফ (অটোরিক্সা), আবদুল হক (মোটর সাইকেল), নাজিম উদ্দিন (আনারস), এখান সংরক্ষিত আসনে ৬ জন, সাধারণ আসনে ৩০ জন প্রার্থী রয়েছে। তাছাড়া সংরক্ষিত আসন-২ এ বুলবুলি দাশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কাথারিয়া ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে মোট ৪৩টি বুথে ১৪ হাজার ৩৪১ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে ইব্নে আমিন (নৌকা), শাহজাহান চৌধুরী (ধানের শীষ), জয়নাল আবেদীন চৌধুরী (অটোরিক্সা), আবদুল মালেক (চেয়ার), রাসেল চৌধুরী (রজনীগন্ধা), শাহীন আক্তার (আনারস), মোঃ নুর হোসেন (মোমবাতি), এখানে সংরক্ষিত আসনে ৯ জন, সাধারণ আসনে ৩৫ জন প্রার্থী রয়েছে। বাহারছড়া ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৬৪টি বুথে ২৪ হাজার ৪২৬ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

চেয়ারম্যান পদে অধ্যাপক তাজুল ইসলাম (নৌকা), মাস্টার লোকমান আহমদ (ধানের শীষ), বখতেয়ার উদ্দিন চৌধুরী করিম (আনারস), রেজাউল করিম চৌধুরী (অটোরিক্সা), মোঃ মুজিবুর রহমান (টেলিফোন), আমান উল্লাহ খান (ঘোড়া), মোঃ জসীম উদ্দিন (টেবিল ফ্যান), সাজ্জাদ উল্লাহ চৌধুরী (মোটর সাইকেল), এখানে সংরক্ষিত আসনে ১০ জন, সাধারণ আসনে ৪১ জন প্রার্থী রয়েছে। কালীপুর ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৬০ টি বুথে ২২ হাজার ১৬২ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে এডভোকেট শাহাদত আলম (নৌকা), আমিনুর রহমান চৌধুরী (ধানের শীষ), মোঃ নাছের (আনারস), সজনূর নাহার (অটোরিক্সা), এখানে সংরক্ষিত আসনে ৯ জন এবং সাধারণ আসনে ৩৮ জন প্রার্থী রয়েছে।

সাধনপুর ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৪৯টি বুথে ১৭ হাজার ৯৬৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে চেয়ারম্যান পদে মোঃ মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকা (নৌকা), আহছান উল্লাহ চৌধুরী (আনারস), মোঃ মহিউদ্দিন (মোটর সাইকেল), মোঃ রাশেদ (অটোরিক্সা), ইন্নে আমিন (টেবিল ফ্যান), এখানে সংরক্ষিত আসনে ১০ জন, সাধারণ আসনে ৩৮ জন প্রার্থী রয়েছে। পুকুরিয়া ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ৫২টি বুথে ১৮ হাজার ৮৯৮ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে প্রার্থীরা হলেন, চেয়ারম্যান পদে মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক (নৌকা), মোঃ আক্তার হোছাইন (আনারস), আসহাব উদ্দিন (ধানের শীষ), আলতাফ হোছাইন (চশমা), এখানে সংরক্ষিত আসনে ৯ জন এবং সাধারণ আসনে ৪৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।

সরল ইউনিয়নে ১২টি কেন্দ্রে ৭০টি বুথে ২৪ হাজার ৭৩৬ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এখানে চেয়ারম্যান পদে একমাত্র প্রার্থী থাকায় রশিদ আহমদ চৌধুরীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১০ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৪ জন প্রার্থী রয়েছে। এদিকে দীর্ঘ এক বছর পর আবারো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় জনগণের মাঝে কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে। অপরদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন প্রার্থী এবং সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা হলে তারা জানান দীর্ঘ সময় পর হলেও শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হবে এটাই প্রত্যাশা আমাদের।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.