সিএমপি‘র পক্ষে পহেলা বৈশাখে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে- ইকবাল বাহার
নিজস্ব প্রতিনিধি : পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা, সিআরবি ও ডিসি হিলে দর্শকদের পানীয় জাতীয় কোনো ব্যাগ, পোটলা, বোতল বহন না করার অনুরোধ জানিয়ে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনকেও পানীয় জলের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপনে চট্টগ্রাম নগরীতে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তার পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তার বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার।
প্রতি বছরের মতো এবারও ডিসি হিল, সিআরবিসহ তিনটি স্থানে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হলেও এবছর অসুস্থ রেফারিদের সহায়তার জন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ‘বৈশাখী রঙ’ নামে আরও একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
“এসব অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগর পুলিশের এক হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে।”
দর্শনীর বিনিময়ে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে দর্শকরা প্রবেশ করলেও ডিসি হিলের নজরুল মঞ্চ ও সিআরবি শিরিষ তলার অনুষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত।
সিএমপি কমিশনার জানান, ডিসি হিলের ছয়টি গেইটের মধ্যে তিন ও চার নম্বর গেইট বন্ধ রাখা হবে। প্রথম গেইট দিয়ে দর্শনার্থীরা ও দ্বিতীয় গেইট দিয়ে শিল্পীরা নজরুল মঞ্চে প্রবেশ করবে। পাঁচ ও ছয় নম্বর গেইট দিয়ে বের হয়ে আসবে।
এছাড়া সিআরবি শিরিষ তলার অনুষ্ঠানে যাওয়ার ক্ষেত্রেও দর্শকদের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
“ডিসি হিলে প্রবেশের ক্ষেত্রে নন্দনকানন ১ নম্বর গলি ও বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে, সিআরবি শিরিষ তলায় প্রবেশের ক্ষেত্রে কাঠের বাংলো, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মোড়, সিআরবি পুলিশ ফাঁড়ি মোড়ে আর্চওয়ে বসানো হবে। দেহতল্লাশির মাধ্যমে এসব স্থানে প্রবেশ করতে হবে দর্শকদের।”
চট্টগ্রামে নববর্ষে জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট আলাদা আলাদা করে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করবেন।
এছাড়া অন্য কেউ শোভাযাত্রা বের করতে চাইলে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পুলিশ কমিশনার জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রায় দেহ তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হবে এবং মাঝপথে কেউ শোভাযাত্রায় প্রবেশ করতে পারবেন না।
এছাড়া কেউ ভুভুজেলা বাজাতে পারবে না। মুখোশ তৈরি করে থাকলে তা মুখে না লাগিয়ে হাতে বহন করার অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ হকার নিয়ন্ত্রণেও বেশকিছু পদক্ষের কথা জানান সিএমপি কমিশনার।
অনুষ্ঠান স্থল ও আশেপাশে যত্রতত্র হকার ও অস্থায়ী দোকান বসানো এবং গ্যাস সিলিন্ডারসহ বেলুন ও ফ্লাক্স নিয়ে চা বিক্রেতা অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে পারবে না।
তবে নির্দিষ্টস্থানে হকাররা বসতে পারবেন বলেও জানান পুলিশ কমিশনার।
নগর পুলিশ প্রধান ইকবাল বাহার জানান, ডিসি হিল, সিআরবি এলাকা সিসি ক্যামেরা আওতায় রাখা হবে। এজন্য সিআরবি এলাকায় অন্তত আরও ৩০ টি এবং ডিসি হিলে ১৫টির মতো অতিরিক্ত ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
এছাড়াও ডিসি হিল, সিআরবি শিরিষ তলা ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিকাল ৫টার মধ্যে উন্মুক্ত স্থানে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। মোটর সাইকেলে চালক ব্যতীত অন্য কেউ আরোহন করতে পারবে না।
এছাড়া জুম্মার নামাজের সময় সময় গান-বাজনা মাইক বন্ধ রাখারও অনুরোধ জানান সিএমপি কমিশনার।
যান চলাচলে নির্দেশনা-
পহেলা বৈশাখে যান চলালে বিধি নিষেধও আরোপ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
নগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নন্দন কানন পুলিশ প্লাজা, চেরাগী পাহাড়, এনায়েত বাজার ও লাভ লেইন মোড় থেকে ডিসি হিলমুখী কোনো যান চলাচল করতে পারবে না।
এছাড়া সিআরবি কাঠের বাংলো, আটমাসিং মোড়, নেভাল অ্যাভেনিউ মোড়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিশুপার্ক গোল চত্ত্বর মোড় হতে সিআরবি সাত রাস্তা মোড় পর্যন্ত কোনো ধরনের যান চলাচল করতে পারবে না।
এদিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও বিচ এলাকায়ও যান চলাচলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বাটারফ্লাই পার্ক মোড় হতে নেভাল অ্যকাডেমি গেইট, ওয়েস্ট পয়েন্ট মোড় হয়ে কাঠগড় পর্যন্ত কোনো প্রকার যান চলাচল করতে পারবে না বলে জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।