ক্যামেরা ফেলে উদ্ধারকাজে সাংবাদিক

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::একটি ছবি হাজার লক্ষ শব্দের সমান। কয়েক হাজার শব্দ ব্যবহার করে যা বোঝানো সম্ভব নয় তা খুব সহজেই একটি ছবির মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব।

সিরিয়া যুদ্ধের নির্মমতার একটি ছবি সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের হৃদয়কে নাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৫ সালে সমুদ্র তীরে আয়লান কুর্দি নামে এক শরণার্থী শিশুর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা মরদেহের ছবি ওই সময় সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

গত সপ্তাহে সিরিয়ার অবরুদ্ধ গ্রাম থেকে অবরুদ্ধদের সরিয়ে নেয়ার সময় একটি বাসে বোমা হামলায় ১২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওই সময় ফটোসাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আবদে আলকাদের হাবাক সেখানে পৌঁছে হতাহতদের সাহায্যে এগিয়ে যান।

হাবাক সিএনএনকে ওই ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, অত্যন্ত ভয়ঙ্কর দৃশ্য ছিল সেটি। আমার পাশেই শিশুরা হাহাকার করছে, মারা যাচ্ছে। তাই সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা আমাদের ক্যামেরা একপাশে সরিয়ে রেখে আহতদের উদ্ধার শুরু করব। হয়তো ওই হামলার কিছু ছবি তুলতে পারলে হাবাক বেশ জনপ্রিয় হতেন কিন্তু তখন ছবি তোলার চেয়ে আহত শিশুদের উদ্ধার করাটাই তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল।

হাবাক বলেন, ‘ঘটনাস্থলে একটি শিশুটিকে উল্টে দেখি সে মারা গেছে। এরপর আরেকজনের কাছে ছুটে যাই। দূর থেকে কেউ একজন চিৎকার করে বলছিল ওই শিশুটিও মারা গেছে। কিন্তু ছেলেটি তখনো বেঁচে ছিল।’ এরপর হাবাক তাকে নিরাপদ স্থানে নেয়ার জন্য ছুটতে থাকেন। আর ওই বিশৃঙ্খলার মধ্যেও তার ক্যামেরা অন ছিল। সেই সঙ্গে পুরো ঘটনা রেকর্ডিং হচ্ছিল।

শিশুটি শক্ত করে হাবাকের হাতটা ধরে মুখের দিকে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিল। শিশুটিকে কোলে নিয়ে ক্যামেরাসহ অ্যাম্বুলেন্সের দিকে ছুটে যান তিনি। সেই ছবি তুলেছিলেন আরেক ফটোসাংবাদিক মুহাম্মদ আল-রাগেব।

আল-রাগেব জানান, প্রথমে সে (হাবাক) শিশুদের সাহায্য করেছে, তারপর ছবি তুলেছে। আমি সেই দৃশ্যগুলো ক্যামেরায় ধারণ করতে চেয়েছিলাম। হাবাকের মতো তরুণ সাংবাদিকের এরকম মানবিকতা দেখে আমি গর্বিত।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.