এতে করে ফাঁকা নগরীতে আয়েশীভাবে যে একটু ঘুরে বেড়াবেন বা পরিবার নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যাবেন, বৃষ্টির কারণে সে ইচ্ছে জলাঞ্জলি দিয়ে তাদের অনেককেই ঘরে বন্দী হয়ে থাকতে হচ্ছে। অবশ্য অনেকে এসব উপেক্ষা করেই বেরিয়ে পড়ছেন, ছুটছেন গন্তব্যে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা মূলত গত বুধবার থেকেই ফাঁকা হতে শুরু করেছে। পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নগরবাসী ওই দিন থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবারও অফিস করে অনেকে রাজধানী ছেড়েছেন। শুক্রবার থেকে তো টানা তিন দিনের ঈদ ছুটিই শুরু হয়েছে। আর সেদিন সবচেয়ে বেশি মানুষ নাড়ির টানে ঢাকা ছেড়েছেন। এতে করে প্রায় দেড় কোটি মানুষের ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা হয়ে পরেছে।
শুক্রবারের পর থেকে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নগরী ঢাকা। অথচ কয়েক দিন আগেও রাজধানী ছিল মানুষে সরগরম।
অসহ্য যানজটের নগরী ঢাকার ব্যস্ত সড়কগুলো এখন ফাঁকা পড়ে আছে। হাতে গোনা কিছু যানবাহন চলাচল করছে। অথচ যে শহরে মানুষ গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে হেঁটে থাকেন, সে শহর এখন অনেকটাই মানবশূন্য।
তবে এর মধ্যেও যারা একটু ঘর থেকে বের হতেন, তারাও এখন টানা বর্ষণের কারণে গৃহবন্দি হয়ে আছেন।
ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা সোলায়মান আলী বাসসকে জানান, বড় বড় রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় ঢাকা শহরকে চেনাই যায় না। আর এখন মনে হয় অন্যরকম এক নগরী। তবে এই সময়টা আমাদের একটু আরামে কাটে। রাস্তা-ঘাটসহ সবকিছু একটু ফাঁকা থাকে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে এ সময় একটু আরামে চলাফেরা করা যায়। এবার অবশ্য বৃষ্টির কারণে সে চলাচলেও ভাটা পরেছে।
বাসাবোর মুদি দোকানী মাসুদ হাসান জানান, ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা যেন ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে। মানুষজনের তেমন হৈ-হল্লা নেই। কাস্টমারও কমে গেছে। তবে ফাঁকা ফাঁকা পরিবেশটা খারাপ লাগছে না।
এ দোকানেই পণ্য কিনতে আসা শামীম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ঈশ! সব সময় যদি পরিবেশটা এমন শান্ত থাকতো, কোন রকম যানজট ছাড়া নগরীর গাড়িগুলো এখনকার মত অনবরত চলাচল করতো, তাহলে কতই না ভাল হতো। নিমেষেই ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাওয়া যেত।
আজ সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যানজটবিহীন এক অন্যরকম নগরীর দেখা গেছে। ফুটপাথেও হকারের কোন কোলাহল চোখে পড়েনি। একেবারেই নির্ঞ্ঝাট শান্তশিষ্ট এক নগরীর আবেশ অনুভব করছে এখন ঢাকার বাসিন্দারা, যা তাদের সব সময়ই কাম্য।
ফাঁকা নগরীতে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে কিনা এমন আশঙ্কা থাকে নগরবাসীর। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাসা-বাড়িতে চুরি ও ডাকাতি প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে নগরবাসীকে আসস্থ করেছে, যাতে ঈদ আনন্দ উপভোগ করে নগরীতে ফিরে কাউকে দুর্ভোগে পরতে না হয়।