হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: হাওর এলাকায় যে পরিমাণ পানি এসেছে, সেটি কোনো বাঁধের পক্ষেই আটকে রাখা সম্ভব হতো না বলে দাবি করেছেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, হাওরে বাঁধ দেয়া হয় সাড়ে ছয় মিটার উঁচু। কিন্তু এবার পানি এসেছে আট মিটারেরও বেশি।

রবিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পানিসম্পদ মন্ত্রী।

চলতি মাসের শুরু থেকেই হাওর অধ্যুষিত সিলেট বিভাগের চার জেলা, বৃহত্তর ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওর এলাকা অকাল বন্যায় ডুবে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে বিস্তীর্ণ হাওর এলাকার ৯০ শতাংশই ডুবে যায়। ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে যায় চাষি। সেই সঙ্গে শুরু হয় মাছের মড়ক, মরতে শুরু করে হাঁসও।

শুরু থেকেই কৃষকরা অভিযোগ করে আসছেন, বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারদের গাফিলতি ও দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যায়নি পানির ঢল।

তবে মন্ত্রী বলছেন বাঁধ নির্মাণে দুর্ণীতির অভিযোগের এখন পর্যন্ত প্রমাণ তারা পাননি। তিনি বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে দুর্নীতির বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত কাগজে-কলমে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।’

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘বাঁধ ভাঙার কারণ দুইটি। একটি হচ্ছে বন্যা। অন্যটি দুর্নীতি। দুইটি ভিন্ন বিষয়। আমরা যে বাঁধগুলো করি সেগুলো ফুললি প্রোটেকশনের জন্য নয়। এগুলো সেফটি মেইনটেইন করে।’

সিলেটের সাম্প্রতিক সময়ের বন্যাকে ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এবারের মতো ব্যাপক আকারের বন্যা কখনও হয়নি। এই বন্যা কোনভাবেই বাঁধ ঠেকাতে পারবে না। কারণ বাঁধের উচ্চতা হচ্ছে সাড়ে ছয় মিটার। আর পানির উচ্চতা হচ্ছে ৮ দশমিক ১ মিটার। সুতরাং বাঁধা কোনোভাবেই এই পানি প্রোটেক্ট করতে পারবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘গত চারদিনের হাওর এলাকার পানি প্রকট আকারে বাড়ছে। আমরা চাইলেও এই বন্যা এড়াতে পারতাম না।’

গত বছরের বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর বাঁধা নির্মাণের কাজ বুঝিয়ে না দেয়ার কারণে অর্ধেক বিল পরিশোধ করা হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সারাদেশে ৮২০টি বাঁধ সংষ্কারের জন্য চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫২০টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষের দ্বারা। মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় কৃষকরা নৌকায় করে ধান নিয়ে যাওয়ার সময় বাঁধ কেটে ফেলে। এটাও একটা সমস্যা।’ তিনি বলেন, ‘৪০টি নদীর মুখে বাঁধ থাকে, যেগুলো ভেঙে দিতে হয়। ২৭০টি জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত নদী ঠিক করতে হয়। বাঁধের এই ক্ষতি আমরাও করি, এবং করতে বাধ্য হই।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.