রাউজানে রাতে এক যুবককে গুলি করে হত্যা
এম. রমজান আলী, রাউজান : রাউজানে মধ্যরাতে ঘুমান্ত এক যুবককে ডেকে নিয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। নিহত যুবকের নাম পারভেজ হোসেন (২০)। তার পিতার নাম মোহাম্মদ ফরিদ। ১লা মে সোমবার দিবাগত রাতে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে উপজেলার রাউজান ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের শমসের নগর এলাকার ভেঙ্গৃু চকিদারের বাড়িতে।
মঙ্গলবার সকালে, ভেঙ্গু চকিদারের বাড়ির পুকুর ঘাটে মাথার কুলিবিহীন পারভেজের নিথরদেহ পরে আছে। লাশের ডান পাশে পরে আছে দেশীয় তৈরী একটি কাটাঁ বন্দুক। বন্দুকের ভিতর রয়েছে এক রাউ- কার্তুজ। লাশের বাম পাশে পুকুর পাড়ে রয়েছে বড় আকৃতির একটি গাছ। গাছটি রক্তাক্ত অবস্থায়। গাছের গোড়ালীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মাথার মগজ। ধারণা করা হচ্ছে নিহত পারভেজকে গুলি করার পর গাছের সাথে মাথা তেঁতলে ফেলা হয়েছে।
পুত্র শোকে মায়ের আহজারী: পারভেজের মা ছৈয়দুর নূর বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার ছেলে রাত ১১টায় ঘরে এসে ঘুমিয়ে পরেছিল। কে বা কাহারা আমার ছেলেকে শেষ রাতে ডেকে নিয়ে গেল। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও। মায়ের বিলাপে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত: ভোরে নামাজ পড়তে উঠে প্রথমে পারভেজের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখে প্রতিবেশি ময়নাল উদ্দিন নামে তার এক চাচা। তিনি লাশ দেখে বাড়ির সবাইকে খবর দিলে পারভেজকে সনাক্ত করে সবাই। স্থানীয় লোকজনের অভিমত: পারভেজ দৈনিক হিসাবে কাজ করতেন বিভিন্ন স্থানে। হত্যাকান্ডের স্বীকার পারভেজের পিতা মোহাম্মদ ফরিদ প্রবাসে গত দশটি বছর হয়ে গেলেও ওমান প্রবাসী ফরিদ খোঁজ খবর নেয়নি পরিবারের। তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তান নিয়ে স্ত্রী ছৈয়দুর নূর এক সময় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। পরবর্তীতে পারভেজ লেখাপড়া বন্ধ করে শ্রমজীবি হিসাবে দৈনিক কাজ করে সংসার চালাতেন।
লাশের পাশে অস্ত্রের রহস্য: স্থানীয়দের অভিমত, হত্যার পর লাশের পাশে অস্ত্র রাখার উদ্যেশ্য, আত্বহত্যা হিসাবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্ট করা হয়েছে। প্রথমে স্থানীয়রা আত্বহত্যা মনে করলেও গাছের সাথে মাথা তেঁতলানোর দৃশ্যসহ নানা নমুনায় হত্যা করার প্রমান পাওয়া যায়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বক্তব্য: রাউজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যন বিএম জসিম উদ্দির হিরু জানান, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করেছি। আমরা চেষ্টা করছি আসল রহস্য বের করতে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন ভুলু জানান, ঘটনা যেই করুক আমি এর তদন্ত পূর্বক শাস্তির দাবি জনায়। ঘটনাস্থলে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও ক্রাইম টিম: ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দুল্লাহ রেজা, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপর মো. জাহাঙ্গীর আলম।
দুই পুলিশ কর্মমর্তার দাবি হত্যাকান্ড নাকি আত্বহত্যা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাউজান পুলিশ বিকাল সাড়ে চারটার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠিয়েছে। হত্যাকান্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেপায়েত উল্ল্যাহ জানান, কারা এই ঘটনা করতে পারে সেই ব্যাপরে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার দাবি নিহতের পকেটে একটি চিটি, এক রাউ- গুলি ও একটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। আমরা লাশের ময়না তদন্ত রির্পোট ফেলে বিস্তারিত জানতে পারবো।