আমলাতন্ত্রই বড় সমস্যা: দুদক চেয়ারম্যান

0

আমলাতন্ত্রই আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

সোমবার বাংলাদেশ প্রেস ইনিস্টিটিউটে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিক’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে দুদক এবং প্রেস ইনিস্টিটিউট যৌথভাবে।

দুদক চেয়ারম্যান নিজে একজন আমলা ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমলাতন্ত্রই আমাদের বড় সমস্যা। সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট করা হয়েছে, সরকারও চেষ্টা করেছে। কিন্তু কীভাবে যেন এটা অন্ধকার গহ্বরে চলে যায়।’

হাওরের সমস্যা নিয়ে ওয়াসার কাছে একটি প্রতিবেদন চাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মার্চে দায়িত্ব গ্রহণের পর এপ্রিলে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার ভেতরের পৃষ্ঠায় হাওরের সমস্যা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সেই রিপোর্ট ধরে আমি ওয়াসার সচিবকে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বললাম। ১০ কার্যদিবসে সেই প্রতিবেদনটি চাওয়া হয়। সেই রিপোর্ট এসেছে ১০ মাস পরে। যখন বন্যার নতুন পানি এসেছে। এই ১০ মাস যদি দেরি না হতো, সত্যিকার অর্থে যদি প্রতিবেদন পাওয়া যেত তাহলে এবার হয়তো এবারের বন্যা নাও হতে পারতো।’

আমলাতন্ত্রের ধীর গতির কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমলাতন্ত্রের এই কচ্ছপের গতি থেকে না বের হলে কোনো কাজ হবে না।’

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে দুদক প্রতিবেদন পেশ করবে উল্লেখ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘ওই প্রতিবেদনে আপনারা দেখবেন, মামলার হার কমে গেছে। আমরা যথাযথ মামলা করা এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছি।’

আমার মিডিয়া ছাড়া কোনো বন্ধু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি কোথায় জবাবদিহি করব তা জানি না। আমার মনে হয়েছে আমার জবাবদিহিটা করা দরকার এই  মিডিয়ার কাছেই।’

গত এক বছর গণমাধ্যমের কাছ থেকে দূরে থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘গত এক বছর আমি মিডিয়ার কাছ থেকে দূরে ছিলাম। আসলে আমাকে কি করা উচিৎ সেই বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেছি। সেই বিষয়ে একটি স্ট্র্যাটেজি করেছি। এখন আমি আমার মোবাইল নম্বর সবাইকে দিতে বলেছি। আমি নিজেও মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছি।’

সাংবাদিকদের দুদকে প্রবেশ করতে না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অফিসে ঢোকার কোনো প্রয়োজন নেই। আমিই আপনাদেরকে তথ্য দিচ্ছি। আপনারা আমাকে ফোন করবেন। গত বছর আমি নম্বর দেইনি। এ বছর আমার নম্বর ওপেন করে দিয়েছি।’

ঘটনা-উত্তর-তথ্য আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ না উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনি আমার কাছ থেকে যে তথ্য নেবেন, সেই তথ্য প্রকাশ করবেন তা আমি চাই না। আমি চাই, আপনারা তথ্য তৈরি করবেন, আপনি তথ্য দেবেন। সে তথ্যটাই মূলত আমার কাছে অভিযোগ। আমরা দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য পত্রিকা থেকে নিচ্ছি। সেখানে দুর্নীতি বন্ধও করেছি।’

দৈনিক সমকাল পত্রিকার সম্পাদক ও পিআইবি পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় তথ্য কমিশনারের কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার, প্রথম আলো পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ৭১ টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, এটিএন বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান।

গণমাধ্যম কর্মীরা দুদক কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারে না উল্লেখ করে দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি পথ বের করবেন। যাতে গণমাধ্যম কর্মীরা দুদকের প্রতি আস্থা রাখতে পারে। আবার দুদকও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আস্থা রাখতে পারে। আমরা বাড়তি সুযোগ চাই না।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.