পাটের পলিথিন উৎপাদন শুরু

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হয়ে শিগগির বাজারে আসছে পাটের তৈরি পলিব্যাগ, যাকে বলা হচ্ছে পাটের পলিথিন। সেই পাইলট প্রকল্পের উদ্বোধন হয়ে গেলো ঢাকার ডেমরায় লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক পলিব্যাগ যখন বিশ্বেজুড়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে, তখন এই ব্যাগটি বিশ্বকে পথ দেখাবে বলে আশা করছে সরকার। সেই সঙ্গে পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনা আর পাটকলকে লাভে ফেরানোর আশাও করছে সরকার।

শুক্রবার পাটের পলিমার ব্যাগ উৎপাদনের পাইলট প্রকল্প উদ্বোধন করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। উৎপাদনের প্রাথমিক ধাপ পেরিয়ে জুনেই বাজারে চলে আসবে এই ব্যাগ। সাধারণ পলিথিন ব্যাগের সাথে পাটের পলিথিনের সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো এর পরিবেশবান্ধব বৈশিষ্ট্য। পরিত্যক্ত হলে খুব সহজেই মাটির সাথে মিশে যাবে এই ব্যাগ।

পাটের তৈরি এই পলিমার ব্যাগ বিশ্ব বাজারে ‘মুক্তার ব্যবসা’ বলে পরিচিতি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। তিনি বলেছেন, ‘পাট থেকে পলিমার ব্যাগের বৈজ্ঞানিক আবিস্কার বাংলাদেশের জন্য রহমত। এর মাধ্যমে  বিশ্বের বাজারে নতুন করে পরিচিতি লাভ করবে বাংলাদেশ।’

ডেমরায় লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে পাইলট প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘বাজারের পলিথিন ব্যাগ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির কারণে সারা বিশ্বেই পলিথিন নিষিদ্ধের জন্য আন্দোলন হচ্ছে। সেখানে আমাদের পাট থেকে উৎপাদিত পলিমার ব্যাগ অল্প দিনেই মাটিতে মিশে যাবে। পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না। আর এ কারণে এটি সারা বিশ্বে বিশাল বাজার তৈরি হবে বলে আশা করছি।’

গত মার্চে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বহুমুখী পাটপণ্যের মেলায় বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) স্টলে প্রদর্শন করা হয় এই পাট পলিমার। দুই রঙের দৃষ্টিনন্দন পাটের পলিথিন ব্যাগগুলো চারকোণা। বাজারে প্রচলিত পলিথিন ব্যাগের মতোই হালকা ও পাতলা।

ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, ‘পাটকে পাকিস্তান, বৃটিশ সবাই অবজ্ঞা করে পঁচিয়ে ফেলতো। বঙ্গবন্ধু এর গুরুত্ব বুঝতেন। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন সোনালী আঁশ। এই পাটকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন। পাট থেকে আজ যে জিনিস আবিস্কার হয়েছে তা বিশ্বের বাজারে ‘মুক্তার ব্যাবসা’ হিসেবে পরিচিত পাবে।’

পাট শিল্পকে যারা ধ্বংস করেছে তারা দেশের শত্রু মন্তব্য করে ইমাজ উদ্দিন প্রমাণিক বলেন, ‘যারা পাটকে ধ্বংস করছে, যদি বিএনপি করে থাকে তারা দেশের শত্রু। আর যদি এরশাদ করে থাকে, তিনিও দেশের শত্রু। পাট আমাদের জাতীয় সম্পদ।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে ৫০০ বিলিয়ন ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব পাটের পলিমার ব্যাগের বাজার রয়েছে। বাংলাদেশ আবারও নতুন করে বিশ্বের কাছে পরিচিত হবে। দখল করতে পার বিশ্বের বাজার।’

বাংলাদেশে পাট থেকে ১৫০ ধরনের পণ্য উৎপন্ন হচ্ছে বর্তমানে। পাট থেকে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা অভ্যান্তরীণ বাজারেও রয়েছে ব্যাপক হারে। এখন এ ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আবিষ্কার এবং উৎপাদনে ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক বাজারেও ছড়িয়ে যাবে বাংলাদেশের পাট।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.