ইউএনডব্লিউটিও’র সভা বহির্বিশ্বে ইতিবাচক বার্তা দিবে: মেনন

0

নিজস্ব প্রতিবেদক::জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও’র) সভা বাংলাদেশে নিরাপত্তার বিষয়ে বহিঃবিশ্বে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌছে দিবে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

বুধবার (১৭ মে)সন্ধ্যায় তিন দিনব্যাপী সম্মেলন শেষে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ২০টিরও বেশি দেশের ডেলিগেটদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন ও সম্পন্ন করা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আন্তর্জাতিক এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশ একটি নিরাপদ স্থান’ এই বার্তাটি বহিঃবিশ্বকে জানাতে চেষ্টা করেছি আমরা।এই সফল আয়োজন পর্যটন খাতে আমাদের সামর্থ্যের পরিচয়।

একই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও)’র মহাসচিব তালেব রিফাই বলেন, সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড এখন শুধু একটি দেশের সমস্যা নয়। এটি বৈশ্বিক একটি সমস্যা। তাই বিচ্ছিন্ন একটি সন্ত্রাসী হামলা বা কোন ইনসিডেন্ট ঘটলেই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করা বা ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অপ্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া উচিত নয়।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল ও পর্যটন সম্ভাবনাময় দেশগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নাগরিকদের সতর্ক বা ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ না দিতে উন্নত দেশগুলোর প্রতি জোরালো আহবান জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।সংস্থাটির ২৯তম এশিয়া ও প্যাসিফিক কমিশন (সিএপি) এবং দক্ষিণ এশিয়া কমিশনের (সিএসএ) যৌথ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহবান জানান। চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু-তে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে ২০টি দেশের ৬৫ জন বিদেশি ডেলিগেটসহ প্রায় ৩ শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। বিদেশি ডেলিগেটদের মাঝে মন্ত্রী ও সচিবসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও ছিলেন। ১৫ মে পর্যটন বিষয়ক আন্তজার্তিক এ সম্মেলন শুরু হয়। করেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও ইউএনডব্লিউটিও’র মহাসচিব তালেব রিফাই। এ সময় বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানসহ মন্ত্রণালয় ও পর্যটন কর্পোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আর ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়ে ইউএনডব্লিউটিও’র মহাসচিব তালেব রিফাই বলেন, বাংলাদেশ শুধু পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দেশই নয়, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির দিক দিয়েও বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি দেশ। ট্যুরিজম খাতে এদেশের অনেকদূর এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে এর জন্য দেশের সরকারকে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নিতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে সেইফটি ও সিকিউরিটি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং সক্ষমতা অর্জনে।

বাংলাদেশে এটি তাঁর দ্বিতীয় বারের মতো আসা বলেও জানান তালেব রিফাই। সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট সদস্য দেশগুলো তাদের বিভিন্ন প্রস্তাবনা পেশ করেছে। বাংলাদেশও কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছে সম্মেলনে। বাংলাদেশের প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- দেশের পর্যটন খাতে জড়িত মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ইউএনডব্লিউটিও’র সহায়তায় ন্যূনতম তিন মাসের প্রশিক্ষণের আয়োজন এবং ইউনেস্কো’র মতোই ইউএনডব্লিউ-কেও হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণারও প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া ইউএনডব্লিউটিও’র অধীনে সিএনটিএ’র সহায়তায় কক্সবাজারের সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনার প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী বছর (২০১৮ সালে) আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনটি ফিজিতে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয় মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে। এছাড়া ভারতে আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

এর আগে সকালের সেশনে ইউএনডব্লিউটিও’র মহাসচিব তালেব রিফাই, বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী লে. কর্নেল (অবঃ) ফারুক খান, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের চেয়ারম্যান এস এম গোলাম ফারুক এবং ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিনাক্ষী শর্মা বক্তব্য রাখেন। এরপর সদস্য দেশগুলোর ডেলিগেটদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় সিএসএ জয়েন্ট মিটিং। রাতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে তিন দিনের আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন শেষ হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.