আপনের অসহযোগিতায় অলঙ্কার ফেরত পাননি গ্রাহকরা

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: আপন জুয়েলার্সের অসহযোগিতার কারণে গ্রাহকদের স্বর্ণ ও অলঙ্কার নির্ধারিত সময়ে মধ্যে ফেরত দিতে পারেনি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। ফলে আরও তিনদিন সময় বাড়ানো হয়েছে।

আপন জুয়েলার্সের পাঁচ বিক্রয় কেন্দ্র থেকে জব্দ করা সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরার মধ্যে গ্রাহকদেরগুলো ফেরত দিতে গত ১৬ মে সাত দিনের সময় দিয়েছিল শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

জব্দ করা স্বর্ণ ও হীরার মধ্যে গ্রাহকের অংশ কত-সে বিষয়ে হিসাব জমা দিতে বলা হয় আপন জুয়েলার্সকে। কিন্তু তারা সেই হিসাব দেয়নি। গতকাল রবিবার শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক সফিউর রহমান আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমকে। এতে বলা হয়, ১৬ মে আপনের আবেদনের প্রেক্ষিতেই তাদেরকে হিসাব জমা দিতে ২২ মে পর্যন্ত হিসাব সময় দেয়া হয়। আর ২৩ মে দুপুর দুইটার সময়ে গ্রাহকদের উপস্থিতিতে শুনানির সময় নির্ধারণ করা হয়। সেদিন গ্রাহকদেরকে তাদের স্বর্ণ ও হীরার সমর্থনে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়।

ওই চিঠিতে আপন জুয়েলার্সকে আগামী ২৫ মে দুপুর দুইটার সময়ে আটক করা স্বর্ণ ও হীরার সমর্থনে দোকানে রক্ষিত কাগজপত্র থাকলে সেগুলো জমা দিতে বলা হয়। এর মধ্যে তারা তা না দিলে জটিলতার দায়ভার আপনের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ওপর বর্তাবে বলে জানানো হয় চিঠিতে।

জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক সাইফুর রহমান  বলেন, ‘আগামী ২৫ মে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি বিক্রয় কেন্দ্রেই আমরা থাকব। ন্যায়বিচারের জন্য আমরা তাদেরকে আবারও সময় দিয়েছি। আপন জুয়েলার্স যেহেতু জনগণের সঙ্গে ব্যবসা করেন সেহেতু ওইদিন তারা গ্রাহকদের প্রকৃত বিবরণী আমাদের দেবেন। অন্যথায় আইনানুগভাবেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।’

কেন হিসাব জমা দেয়া হয়নি-জানতে চাইলে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

গত ১৩ ও ১৪ মে রাজধানীতে আপন জুয়েলার্সের মোট ছয়টি বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দারা। এ সময় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ছাড়াও জব্দ করা হয় ৪২৭ গ্রাম হীরা। এসব ধাতুর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ১৭ মে আপনের মালিকপক্ষকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে তলব করা হয়।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে আপনের মালিক দিলদার ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ অধিদপ্তরে আসেন। বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত বৈঠক চলে দুই পক্ষে।

বৈঠক শেষে আপনের মালিক দিলদার আহমেদ দাবি করেন, তাদের সব স্বর্ণই বৈধ। আর কাগজপত্র দাখিলে ১৫ দিন সময় চেয়েছেন তারা।

সেলিম স্বীকার করেন, গত পাঁচ বছরে কোনো স্বর্ণ বৈধভাবে আমদানি হয়নি। তার দাবি পুরনো স্বর্ণ গলিয়েই অলঙ্কারের ব্যবসা করেন তারা। আর আপনের এই ব্যবসা অবৈধ হলে দেশের সব জুয়েলার্সের ব্যবসাই অবৈধ। কাজেই বন্ধ করতে হলে করতে হবে সবার ব্যবসাই।

দিলদারের এই বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠায় রিপেয়ারিং এবং এক্সচেঞ্জের জন্য যে সকল গ্রাহক তাদের স্বর্ণ এবং অন্যান্য মূল্যবান অলঙ্কার অক্ষত অবস্থায় গচ্ছিত রেখেছেলেন তাদেরকে তা ফেরত দেওয়া হবে।’

২২ মে সোমবার দুপুর দুইটায় গ্রাহকদেরকে আপন জুয়েলার্সের সংশ্লিষ্ট শাখায় রসিদসহ উপস্থিত হলে তাদের স্বর্ণ,স্বর্ণালঙ্কার এবং অন্যান্য মূল্যবান অলঙ্কারা ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানান মঈনুল খান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.