সিটিনিউজ ডেস্ক::দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। এরফলে তার বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রবিবার এই আদেশ দেয়।
আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, জাকির হোসেন ভূঁইয়া। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলা এখন চলবে। তিনি জানান, মামলাটি বিচারিক আদালতে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।
২০১৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।
বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।
খালেদা জিয়া মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেয়া হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার। সাত বছর পর চলতি বছরের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাই কোর্টের দেয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৩০ আগস্ট আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নাশকতার অভিযোগে প্রায় ২০টি মামলা চলমান। এর মধ্যে ১৫টি মামলায় চার্জ গঠন করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে রয়েছে পাঁচটি মামলা। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলাগুলো করে।
এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ও নাইকো দুর্নীতি মামলা সচল রয়েছে।
এছাড়া গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে।