লিটন নন্দীসহ চারজনের জামিন

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী থেমিসের অনুকরণে তৈরি ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সময় আটক ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে জামিন দিয়েছে আদালত।

রবিবার ঢাকার মহানগর হাকিম এ কে এম মঈনুদ্দীন সিদ্দিকী তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিন পাওয়া বাকি তিনজন হলেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি মোর্শেদ হালিম, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী আল আমিন হোসেন জয় ও উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফ নূর।

সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে গত শুক্রবার বিক্ষোভ করার সময় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিবাদীপক্ষের আইনজীবী সোহেল আহমেদ বলেছেন, ‘এ মামলার এজাহারে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার সঙ্গে এই চারজন জড়িত ছিলেন না—আদালতকে তা জানানো হয়েছে। আজ বিবাদীপক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সারা হোসেন।

গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা ও পুলিশকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় এই চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য আজ রোববার দিন ধার্য করেন।

ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গত শুক্রবার দুপুরের দিকে ছাত্র ইউনিয়ন, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ও ব্লগার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, গণজাগরণ মঞ্চ, ছাত্র-শিক্ষক-লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী, নাগরিকেরাসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রঙিন পানি ছিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন ১০ জন। পুলিশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

গত ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটক বরাবর লিলি ফোয়ারায় ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়। এরপর থেকেই ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো এই ভাস্কর্যকে মূর্তি আখ্যা দিয়ে তা সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাতে থাকে। রমজান মাস শুরুর আগেই এটি অপসারণ না হলে পরিণতি ভালো হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

গত ১০ এপ্রিল কওমি মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের সঙ্গে গণভবনে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই ভাস্কর্য থাকা উচিত নয়। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।

গত ১৫ এপ্রিল বিচারপতিদের বাসভবন উদ্বোধন উপলক্ষে কাকরাইল গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ছিলেন প্রধান বিচারপতিও। সেখানে এই অনুষ্ঠানের পর তার সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। আর দেড় মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়। এর নির্মাতা মৃণাল হকও এ সময় সঙ্গে ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোররাত চারটা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষের কথায় শনিবার রাত ১০টার দিকে অ্যানেক্স ভবনের সামনে ভাস্কর্যটি পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। শেষ হয় রাত পৌনে ১টার দিকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মৃনাল হক ভাস্কর্যটি পুনঃস্থাপনের কাজ তদারকি করেন বলে জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.