চন্দনাইশে ঘূর্ণিঝড়‘মোরা’: বিদ্যুতের লাইনে ব্যাপক ক্ষতি
নিজস্ব সংবাদদাতা,চন্দনাইশ : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’র মোকাবেলায় চন্দনাইশ উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল। মঙ্গলবার ৩০ মে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পাঁচ ঘন্টাকালব্যাপী ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ ধমকা হাওয়া, প্রবল বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১টি স্কুল, ১০টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও চার শতাধিক আংশিক, ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। সে সাথে বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন জায়গায় তার ছিঁড়ে বিদ্যুতের লাইনের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হওয়ায় বৈদ্যুতিক লাইন স্বাভাবিক করতে আগামী এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় গত ২৯ মে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। সভায় দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। সে সাথে চন্দনাইশে ৫টি সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রতিটি ইউনিয়নে ২টি করে আশ্রয়ন কেন্দ্র খোলা হয়েছিল।
এর মধ্যে ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯টি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয়ন কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ সকল আশ্রয়ন কেন্দ্রে শঙ্খ তীরবর্তী কিছু লোকজন অবস্থান নিয়েছিল। প্রতিটি ইউনিয়নে ১ জন করে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করে সার্বক্ষণিক বিভিন্ন এলাকার খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছিল।
সরকারি নির্দেশ মোতাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল। ১৫টি মেডিকেল টিম, প্রতিটি ইউনিয়নে এনজিও’র মাধ্যমে টিম গঠন করা হয়েছিল। এ সকল প্রস্তুতির কারণে জানমালের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান। ঘূর্নিঝড় পরবর্তী তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করে বলেন, বেশকিছু গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে।
ধোপাছড়ির শামুকছড়ি স্কুল, জামিরজুরী কয়েকটি ঘরসহ ১০টি বাড়ীঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। চার শতাধিক আংশিক বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি ৩শ পরিবারকে দুর্যোগ কবলিত পরিবার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শাক সবজিতে ২শ হেক্টর, ফল বাগানে ৫০ হেক্টর জমির ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বিভিন্ন সড়কে গাছপালা ভেঙ্গে পড়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। শঙ্খনদীতে পাহাড়ি ঢলের পানি উপচে পড়েছে। তবে জানমালের তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, এ পর্যন্ত ৬টি খুঁটি ভেঙ্গে পড়ার খবর পেয়েছেন। বিদ্যুৎ লাইনের উপর গাছপালা ভেঙ্গে পড়ার কারণে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুৎ স্বাভাবিক করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে তিনি জানান। তবে আজ ৩১ মে থেকে আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ চালু রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।