আগ্রাবাদে অবৈধ টেম্পু ষ্ট্যান্ডে টিআই হেমায়েতের চাঁদা বাণিজ্য

0

গোলাম শরীফ টিটু : নগরীর আগ্রাবাদ বানিজ্যিক এলাকার বাদামতলী মোড়ে গড়ে তোলা অবৈধ টু-ষ্ট্রোক টেম্পো ষ্ট্যান্ডের কারনে সারাদিন যানজট ও বিশৃঙ্খলা লেখে থাকলেও ট্রাফিক বিভাগ যেন কিছুই দেখেন না। শহরের মারাত্বক পরিবেশ দুষন ও দুর্ঘটনার নেপথ্যে কারন জরাজীর্ন টু-ষ্ট্রোক টেম্পোগুলো এখনো দাপটের সাথে রাস্তা দখলে রেখেছে আগ্রাবাদ থেকে বড়পোল রুটে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর বখাটেদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে এসব টেম্পু। চালকদের কারো কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই।

এসব গাড়িরই নেই বৈধ কাগজপত্র, ফিটনেস সার্টিফিকেট বা রুট পারমিট। জানা গেছে, স্থানীয় ছিটকে সন্ত্রাসী, মহল্লার বখাটে ও রাস্তার টোকাইদের সমন্বয়ে গঠিত কথিত সমিতির মাধ্যমে চলছে এসব অবৈধ টেম্পু। আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে বড়পোল পর্যন্ত রাস্তায় যানজট, দুর্ঘটনা ও যাত্রীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করলেও এসব অবৈধ টেম্পু বন্ধ করার ক্ষমতা নেই কারো কাছে। খোদ ট্রাফিক বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের টেম্পু চালকদের পক্ষে দালালী করতে দেখা যায়।

অভিযোগে প্রকাশ, এ অবৈধ টেম্পু ষ্ট্যান্ডের মালিক শ্রমিকদের বেপরোয়া দৌরাত্ব্যের কারনে আগ্রাবাদ বানিজ্যিক এলাকার প্রধান বিপনী কেন্দ্র সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট, আক্তারুজ্জাম্মান সেন্টার, সাউথল্যান্ড সেন্টর ও লাকী প্লাজার সামনে লেগে থাকে সারাদিন যানজট।

লক্ষ লক্ষ টাকা পুজি বিনিয়োগ করে মার্কেটে দোকান দিয়ে ব্যবসায়ীরা টেম্পু চালক-মালিক-শ্রমিকদের কাছে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার সম্মুখিন হচ্ছেন। ঘন্টার পর ঘন্টার এসব মার্কেটের পার্কিং এলাকা অবরুদ্ধ করে দাড়িয়ে থাকে এসব টেম্পু। এ ব্যাপারে মার্কেট কর্তৃপক্ষ বারবার আপত্তি জানালেও তারা কাউকে পরোয়া করেন না। উপরন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ী কর্মচারীদের সঙ্গে চরম দু:ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত।

জানা যায়,’গত ৫ জুন, সোমবার, সকাল ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেটের সামনে ১০-১২টি টেম্পু দাঁড়িয়ে থাকলে টেম্পুগুলোকে মার্কেটের সামনে থেকে সরে দাড়াঁতে বলেন মার্কেটের সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সংগঠক আনিছুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে চরম দুঃব্যবহার করে। মুহুর্তের মধ্যে টেম্পু শ্রমিক-মালিক নামধারী ২০-৩০জনের একদল উশ্চৃংখল যুবক এসে মার্কেটের কর্মচারীদের গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করেন। এ অবস্থায় ব্যবসায়ী নেতা আনিছুর রহমান চৌধুরী তাৎক্ষনিক ভাবে ডিসি-ট্রাফিককে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি একজন লোক পাঠানোর কথা বলেন। টিআই হেমায়েত উল্লাহ এসে পরিস্থিতি নিস্পত্তি না করে টেম্পু মালিক শ্রমিকদের থানায় গিয়ে মামলা করার উস্কানী দিলে হতভম্ব হয়ে যান ব্যবসায়ীরা।

টিআই হেমায়েতের আস্কারা পেয়ে টেম্পু শ্রমিকরা নিজেদের গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে ডবলমুরিং থানায় দিয়ে ব্যাবসায়ী নেতা আনিছুর রহমান চৌধুরীকে আসামী করে মামলা করে।

অভিযোগের তদন্ত করার জন্য আসেন ডবলমুরিং থানার এস.আই শফিক। পরবর্তীতে আগ্রাবাদ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হেলালের মধ্যস্থতায় ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে জরুরী বৈঠক বসে টেম্পু চালককে ক্ষতিপুরন দিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তি হয়। উক্ত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আহামদ হোছাইন ও সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব ইব্রাহীম ভুঁইয়া। মার্কেটের ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন,’ সিটি কর্পোরেশনের এই মার্কেটে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত অবৈধ টেম্পু মালিক সমিতির লোকজনের নানা হয়রানী সম্পুখীন হচ্ছেন। তাদের দাবী অবিলম্বে এই অবৈধ টেম্পু ষ্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হোক।

তারা মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে মার্কেটের নিজস্ব পার্কিং এরিয়া থেকে অবৈধ টেম্পু এরিয়া সরিয়ে দিতে মেয়র মহোদয় ও ডিসি ট্রাফিকের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়,’ আগ্রাবাদ বানিজ্যিক এলাকা থেকে বড়পোল পর্যন্ত অর্ধশতাধিক টু-ষ্ট্রোক ট্যাক্সি থেকে এক হাজার টাকা করে প্রতিমাসে অর্থকোটি টাকা মাসোহারা পায় টিআই হেমায়েত। তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে চলছে এ অবৈধ টেম্পু বানিজ্য।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.