ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা!

0

সিটিনিউজবিডি  :  অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এতদিন কি তাহলে ভুল জেনে আসলেন। অবাক হবারই কথা। কেননা সৌন্দর্য সচেতন প্রায় সব মানুষই উষ্ণ পানিতে গোসলের সুফল জানেন আর তাই হালকা গরম পানিতে গোসলের অভ্যাস ও রয়েছে অনেকের।

অতীতে, গরম বা উষ্ণ পানিতে গোসল করাকে রাজকীয় ব্যাপার ধরা হত কেননা সাধারণ মানুষ কাছে ধারে যে পানি পেত তাতেই গোসল করত। এই যেমন পুকুর বা নদীর পানি ঠান্ডাই ছিলো। পরবর্তীতে গরম বা উষ্ণ পানিতে গোসলের উপায় বের হলেও অনেক স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিই শীতল পানিতে গোসল করতেন। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক, শীতল বা ঠান্ডা পানিতে গোসলের উপকারী দিকগুলো আসলে কী কী।

১। ব্যায়াম পরবর্তী শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে
ক্রীড়াবিদদের দেখবেন তাদের ট্রেনিং পর্ব শেষে বরফ জলে গোসল করে। কেন তারা এই বরফ জলে গোসল করে জানেন কি? ট্রেনিং এর সময় শরীরে যে ব্যাথার সৃষ্টি হয়, সে ব্যাথা প্রশমনের জন্যই তারা এই কাজ করে। আপনি বরফ জলে গোসল করতে না পারলেও ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন। সেটাও বরফের মতই কাজ করবে। আর তাই প্রতিদিন ব্যায়াম এবং খাটাখাটনির পর শীতল পানিতে একবার গোসল, আপনাকে দিবে পরবর্তী কিছু সতেজ ও ব্যাথামুক্ত সময়।

২। শরীরের বাড়তি মেদ ঝরাতে
আমাদের শরীরে দুই ধরনের চর্বি রয়েছে। সাদা চর্বি এবং বাদামী চর্বি। সাদা চর্বিগুলো আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর আর বাদামী চর্বিগুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। যেই মেদ কমানোর জন্য আমরা সর্বদা ব্যস্ত থাকি সেই মেদগুলো সাদা চর্বির অন্তর্ভুক্ত। যখন আমরা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই তখন চর্বিওগুলো সাদাচর্বি হিসেবে আমাদের দেহের বাহু, পেট, নিতম্ব, ঘাড় ইত্যাদি স্থানে জমা হয়। আর, শক্তি পাওয়ার জন্য এই চর্বিগুলোকে পুড়িয়ে ফেলা আবশ্যক হয়। অপরদিকে, বাদামী চর্বি আমাদের শরীরের থেকে আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।

সুখবর হচ্ছে এই যে, যখন আপনি শীতল পানিতে গোসল করবেন, তখন এই বাদামী চর্বি আপনার শরীর উষ্ণ রাখার লক্ষ্যে সাদা চর্বিকে গলিয়ে ফেলবে। তারমানে, শীতল বা ঠান্ডা পানিতে গোসল করার মাধ্যমে আপনি বিনা কষ্টে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন। সাম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে শীতল পানিতে গোসলের মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি বছরে ৯ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমাতে সক্ষম হয়।

৩। পরিপাকক্রিয়া ও রক্তচলাচলের পথকে সতেজ রাখাঃ
ঠান্ডা পানিতে গোসলের ফলে দেহের মেটাবলিক এর হার বৃদ্ধি করে। এই হার বৃদ্ধির ফলে, দেহের পরিপাকক্রিয়া সতেজ হয়। একই সাথে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ভাইরাস বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা জন্ম নেয়। এই মেটাবলিক হার বৃদ্ধির ফলে পুরো শরীরের রক্ত চলাচলের পথ সতেজ থাকে যা মানুষকে হাইপারটেনশন থেকে শুরু করে ধমনীজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

৪। আকর্ষণীয় চুল আর ত্বক পাওয়ার সহজ উপায়
ব্রণসমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছেন? নিঃসন্দেহে শীতল পানিতে নিয়মিত গোসল করা আপনার জন্য অত্যান্ত উপকারী। উষ্ণ বা গরম পানি যেখানে আপানার ত্বক শুষ্ককরনের কাজ করে সেখানে শীতল পানি আপনার ত্বক ও লোমকূপের সতেজভাব ধরে রাখে এবং ত্বককে ধুলোবালি পড়ে আঠালো হওয়া থেকে রক্ষা করে। অপরদিকে, সতেজ ও আকর্ষণীয় চুল পেতে শীতল পানির জুড়ি নেই। শীতল পানিতে গোসল করার ফলে মাথার ত্বক থাকে সতেজ। ফলে আপনি পাবেন, একগুচ্ছ সতেজ চুল।

৫। মানসিকভাবে সতেজ রাখা
কে না চায় সকাল থেকে দিনটা কাটুক মনের মত করে। আপনি যদি সত্যি একটি ভালো দিন কাটাতে চান, তবে কাজে যাওয়ার পুর্বে ঠান্ডা পানিতে গোসল করে ফেলুন। শীতল বা ঠান্ডা পানি যখন আপনি শরীরের উপর ঢালবেন তখন এটি আপনার শরীরের উষ্ণতা বৃদ্ধি করবে, আপনার নিঃশ্বাস কে সতেজ করে তুল্বে আর একই সাথে আপনার দেহের অভ্যন্তরকে ভরিয়ে তুলবে সতেজ অক্সিজেনে। শীতল পানিতে গোসলের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি পায় যা আপনাকে সারাদিন সতেজ ও কর্মক্ষম রাখবে এবং মানসিক প্রশান্তিতে ভরে থাকবে আপনার মন।

এতদিন ধরে উষ্ণ পানির সুফল গুলো জেনেছিলেন আর আজ জেনে নিলেন শীতল পানিতে গোসল করার সুফলগুলো। তাহলে এখন থেকে শীতল পানিতে গোসলের অভ্যাস করুন আর সুস্থ থাকুন।

রেফারেন্সঃ Idea digezt

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.