টর্নেডোর কারণে বিদ্যুতের সমস্যা: প্রতিমন্ত্রী

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার গ্রীষ্মের শুরুতে বিদ্যুতের যাওয়া আসায় ক্ষুব্ধ হয়েছে মানুষ। আর সংসদকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু জানিয়েছেন, গত ৪ এপ্রিল টর্নেডোর কারণে মেঘনায় গ্রিড লাইন পড়ে গেছে। এটা এখনও মেরামত করা যায়নি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত দায়যুক্ত ব্যয় ছাড়া অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর ভোট গ্রহণ চলাকালে ছাঁটাই প্রস্তাবে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম প্রশ্ন রাখেন, ‘(বিদ্যুতের) ১৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা হয়েছে। কিন্তু এবার রোজার সময় এর কোনো ফল পাওয়া যায়নি। উপজেলা পর্যায়ে ইফতারের সময় বিদ্যুৎ পায়নি।’

পরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘৪ মে ভয়াবহ টর্নেডো হয়েছে। মেঘনাতে গ্রিড লাইন পড়ে গেছে। এখনও ঠিক করতে পারিনি, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। কোরিয়ার প্রকৌশলীরা এসেছেন। ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় কিছুটা সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে। সে কারণে ১০টা পাওয়ার প্ল্যান্ট ট্রিপ করেছে। ১০ থেকে ১২টি সমস্যা করেছিল। এখন ভালো পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সময়টা খারাপ ছিল, রোযার মাস ছিলো। তারপরও আমরা ৮০ শতাংশ জায়গায় ভালো অবস্থানে ছিলাম।’

এরশাদ আমলে বিদ্যুতের সংকট ছিল না, দলের নেতা ফখরুল ইমামের এমন দাবি প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি অতীতে ভাল ছিলেন, কীভাবে ছিলেন জানি না, আমরা সেখানে যেতে চাই না, ১১ ঘণ্টা-১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না, সেই সময়ে যেতে চাই না।’

বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির পরিসংখ্যান দিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০০৯ সাল পর্যন্ত তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছিল। আর সাত বছরে ১০ হাজারের বেশি উৎপাদন করেছি।’

‘১০৯টি বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করেছি। সরকারি ৭৫টি, বেসরকারি ৩৪টি। চলমান আছে ৮২টি। যে অর্থ বরাদ্দ রেখেছেন অর্থমন্ত্রী। অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে ১৪টি। পাইপলাইনে রয়ে গেছে ৫৮টি।’

বিদ্যুৎ খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত বছরে ১০০ শতাংশ, তার আগের বছর ১০২ ও ২০১৪ সালে ১০৪ শতাংশ এডিবি বাস্তবায়ন হয়েছে। বৃহত্তর বাজেটের এ মন্ত্রণালয় প্রতিবছরই শতভাগ এডিবি বাস্তবায়ন করে। আমাদের কাছে শুক্র-শনিবার নেই। ২৪ ঘণ্টা কাজ করা হয়।’

বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি নিয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখনও মাঠ পর্যায়ে কোনো কোনো জায়গায় সমস্যা রয়ে গেছে। সংসদ সদস্যদের সজাগ থাকতে হবে। অনেকে নিজেরা অবস্থান নিয়েছেন, দুর্নীতি চলে গেছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশ প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করে না। কারণ তারা সময় মত বিল দেয়। অনুন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো এভনো প্রিপেইড ব্যবহার করে। আমরা এখন সে দিকে যাচ্ছি। আমাদের দুই কোটি মিটার লাগবে আগামী দুই বছরের মধ্যে তা বাস্তবায়ন হয়ে যাবে।’

‘বিদ্যুতায়ন করা সহজ ব্যাপার না। ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ১০০ মিলিয়ন ডলার লাগে। তারপর ট্রান্সমিশন আছে, আরও খরচ আছে’- এমন মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২৪ হাজার মেগাওয়াট (২০২১ সালের মধ্যে) উৎপাদন করলে টাকা লাগবে ২৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থমন্ত্রীর কাছে আমরা যে টাকা চেয়েছি, অধিকাংশ টাকা তিনি পূরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অফিস করেছেন। কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী এই কাজ করেননি।’

‘১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার এবং ২৪ হাজারে যাওয়া আরও কঠিন ব্যাপার। কিন্তু ইমপসিবল শব্দটা শেখ হাসিনা সরকারের অভিধানে নেই। যে কাজগুলো হচ্ছে, সেগুলো এগিয়ে যাবে এবং সারা বাংলাদেশের সব বাড়ি বিদ্যুতায়িত হবে’-বলে শেষ করেন নসরুল হামিদ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.