পাহাড় ধস: রাঙামাটির ১৫ সরকারি ভবন ঝুঁকিতে

0

সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি:রাঙামাটি সদর থেকে উপজেলার মানিকছড়ি যাওয়ার পথেই ডান পাশে উঁচু পাহাড়ের ওপর বাংলাদেশ টেলিভিশন রাঙামাটি উপকেন্দ্রের কার্যালয়ের অবস্থান। মূল ভবন লাগোয়া পাহাড়ের একাংশ দুর্যোগের সময় ধসে গেছে। টেলিভিশন কেন্দ্রটির দোতলা ভবনটি পাহাড়টির ডানদিকের অংশটি খাড়াভাবে ধসে গেছে। একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। ১৩ জুনের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই সেখানে আশ্রয়ও নিয়েছেন।

এছাড়া শিমুলতলীতে অবস্থিত জেলা পাসপোর্ট অফিসের তিনতলা ভবনও একইরকম ঝুঁকিতে রয়েছে। যে পাহাড়ে এটি অবস্থিত তার পাশেই একাংশ মঙ্গলবারের দুর্যোগে খাড়াভাবে ধসেছে।

রাঙামাটিতে গত ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড়ধসের ১২০ জনের প্রাণহানির ঘটনার পর এমনই ঝুঁকিতে আছে জেলার কমপক্ষে ১৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় অথবা বাংলো। এদের মধ্যে ভেদভেদী এলাকার রাঙমাটি সার্কিট হাউজ, শিমুলতলী এলাকার রেডিও স্টেশন, একই এলাকায় অবস্থিত পাসপোর্ট অফিস বেশি ঝুঁকিতে আছে।

সোমবার বিকালে কয়েকটি এলাকা ঘুরে পাহাড় ধসের ফলে ভবন ঝুঁকির চিত্র দেখা গেছে। ভেদভেদি এলাকায় জেলা সার্কিট হাউজের পেছনের একটি অংশ ধসে গেছে। দোতলা ভবনটির পেছনের অংশের তিন থেকে চার হাত দূরে পাহাড় ধসেছে।

এছাড়া শিমুলতলীতে বাংলাদেশ বেতার রাঙামাটি কেন্দ্রের চতুর্দিকে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। বেতারের দুটি টাওয়ারের গোড়ার মাটি সরে গেছে। একপ্রকার বেতার ভবনটি অনিরাপদই বলা চলে। ধসে রেডিও স্টেশন সংলগ্ন শিমুলতলীতে বেশকয়েকজন মারাও গেছেন।

বাংলাদেশ বেতার রাঙামাটি কেন্দ্রের আঞ্চলিক প্রকৌশলি ভাস্কর দেওয়ান বলেন, চতুর্দিকে পাহাড় ধসে যাওয়া বেতার ভবন পুরোপুরি ঝুঁকিতে আছে। এছাড়া আমাদের তিনটি টাওয়ারও ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে।

এছাড়া বেতার ভবনের প্রবেশ মুখের সড়কও ধসের ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবনের পাম্প হাউজটিও ধসের মাটিতে তলিয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় বেতার ভবন স্থানান্তর করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান বলেন, সব স্থাপনাই তো পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত। এমনিতেই তো ঝুঁকি থাকে। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনায় বেশকয়েকটি সরকারি অফিস ও বাংলো ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এর মধ্যে বেতার ও টিভি ভবন, পাসপোর্ট অফিস ভবন ছাড়াও ডিসি বাংলো, টিঅ্যান্ডটি এলাকার এলজিইডি অফিস, রিজার্ভ বাজার এলাকার এসপি বাংলো, ফিসারি ঘাট এলাকার মৎস্যভবন বাংলোসহ কমপক্ষে ১৫টি সরকারি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান তিনি।

পাহাড়ধস ও অধিক বৃষ্টিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত নিরুপণ করা হয়নি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, বিপর্যয়ের পর আমরা প্রথমেই উদ্ধার তৎপরতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। তা শেষ হয়েছে। এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের পরিস্থিতি জানাতে। এর পরই প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন রাঙামাটিতে স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধসে মারা গেছে ১২০ জন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাঙামাটির সাথে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি সড়ক পথের বিভিন্ন অংশ ও স্থাপনা।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.