সিটিনিউজ ডেস্ক:: বেতন-ভাতা নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সাঙ্গে খেলোয়াড়দের চলমান বিরোধ আরো খারাপ দিকে মোড় নিল।
সিএ’র প্রধান নির্বাহী জেমস স্যাদারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিএ) প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টেয়ার নিকোলসনের মধ্যে সমঝোতার আলোচনা ভেস্তে গেছে।
ফলে আবারো হুমকির মুখে পড়লো অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর।
আর এই ভেস্তে যাওয়ার কারণটাও পুরনো। সিএ লভ্যাংশ ভাগাভাগির নীতি বাতিল করতে চায়।
আর এসিএ এই নীতি টিকিয়ে রেখে সেটা জাতীয় দল ও জাতীয় দলের বাইরের সকল ক্রিকেটারদের মধ্যে উন্মুক্ত করে দেওয়ার পক্ষে।
সিএ’র মুখপাত্র সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ার খবর স্বীকার না করলেও ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, সিএ’র নয়জন পরিচালক এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সিএ’র স্পন্সরদের কপালে।
একই সাথে সিএ’র ব্রডকাস্টিং পার্টনার চ্যানেল নাইন ও টেন নেটওয়ার্কও শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এমন অবস্থায় নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই বিবাদের মীমাংসা না হলে হয়তো ভেস্তেই যেতে পারে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজটি।
দুটি টেস্ট খেলার জন্য আগামী ১৮ আগস্ট বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা স্টিভেন স্মিথের দলের।
এরপর ২২-২৪ আগস্ট ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে অজিরা।
তারপর শুরু হবে মূল সিরিজ। ২৭-৩১ আগস্ট প্রথম টেস্ট ঢাকায় ও ৪-৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে।
অজি দল বাংলাদেশ সফরে না এলে হুমকিতে পড়তে পারে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও।
তবে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ না হলে অক্টোবরে ভারত সফরেও নাও যেতে পারে স্মিথরা।
অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ খবরের কাগজ সিডনি মর্নিং হেরাল্ড জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফর বাতিল হলে অক্টোবরে ভারতের পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও খেলবে না অস্ট্রেলিয়া।
অক্টোবরে ভারতের সঙ্গে পাঁচটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা অস্ট্রেলিয়ার।
বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ১০ আগস্ট থেকে ডারউইনে ক্যাম্প করার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া দলের।
তবে বেতন-ভাতা নিয়ে জটিলতার কারণে এই ক্যাম্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সময়মত প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু না হলে ভেস্তে যেতে বাংলাদেশ সফর।
জানিয়ে রাখা ভাল, গত এপ্রিলে ক্রিকেটারদের প্রায় ৩৫ শতাংশ বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
তবে বোর্ডের সেই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন দেশটির ক্রিকেটাররা। তারা সবার জন্য লভ্যাংশ ভাগাভাগির মডেল চায়।
বোর্ডের অনড় অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হন দুইশর বেশি ক্রিকেটার।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ‘এ’ দলের সফরও বয়কট করেন ক্রিকেটাররা।
এবার হুমকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত সফর। ভারত থেকে ফিরে দেশের মাটিতেই অ্যাশেজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
এরপর ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজের পরই অপেক্ষা করছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।
তবে, চলমান জটিলতায় কোনো কিছুই এখন আর চূড়ান্ত নয়।
দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায়!
২০১৫ সালেই দুই টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল দলটির।
তবে, নিরাপত্তার ইস্যুতে সেই সিরিজ স্থগিত করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
একই কারণে গত বছরের শুরুতে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেও দল পাঠায়নি তারা। তবে, ২০১৬ সালে অবস্থার উন্নতি হয়।
তিন দফা বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে সিএ-কে সবুজ সংকেত দেন তাদের নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শক শন ক্যারোল।
তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সিএ। এর মধ্যে দল ঘোষণাও করে দিয়েছে তারা।
যদিও এবার অস্ট্রেলিয়ার নিজেদেরই ঘরের জটিলতায় নতুন করে শঙ্কার মুখে পড়লো সিরিজ।