মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ::উপজেলার বরকল শেখ চাঁন্দের পাড়া ব্রীজটি ২০১৫ সালে কাজ শুরু হলেও শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপণ করে চললেও কর্তৃপক্ষ নিরব। ২৫ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪৭ ফুট দৈর্ঘ্য এ ব্রীজটি নির্মাণের কথা রয়েছে। কার্যাদেশ পেয়ে গত বছর মার্চ মাসে কাজটি শুরু হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার উত্তর বরকল-পশ্চিম কানাইমাদারী সংযোগ সড়কের হাওনখালী খালের উপর শেখ চাঁন্দের পাড়া সড়কের উপর ব্রীজটির ২০১৫ সালের শেষের দিকে কার্যাদেশ পেয়ে গত বছর মার্চ মাসে কাজ শুরু করে মেসার্স ইউসুফ এন্ড ব্রাদার্স। বিভিন্ন অজুহাতে দীর্ঘ দেড় বছর সময় অতিবাহিত হলেও ব্রীজে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে এলাকার শিক্ষার্থী, রোগী, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে রোগী কিংবা অন্তঃস্বত্বা মহিলাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্যাপক কষ্ট স্বীকার করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল ইসলাম বলেছেন, তিনি কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারকে একাধিকবার তাগাদাপত্র দিয়েছেন। স্থানীয়দের অসহযোগিতার কারণে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এ ব্যাপারে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায়ও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। অপরদিকে ইউসুফ এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেছেন, কাজটি শুরু করতে গিয়ে জোয়ার-ভাটার খাল হিসেবে হাওনখালী খালে বাঁধ দেয়া জরুরী হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে স্থানীয়দের সহযোগিতা চেয়ে সুইচ গেইটটি বন্ধ করতে গেলে এক পক্ষ থেকে বাঁধা আসে। বোরো ধানের চাষ শেষ করে দেওয়ার কথা বলে। পরবর্তীতে বাঁধ দেওয়ার পরে কে বা কারা বাঁধ কেটে দেয়, সুইচ গেইট খুলে দেয়। ফলে বাঁধ ভেঙ্গে অনেক টাকা লোকসানে পড়ে সে।
এ বিষয় নিয়ে গত বছর স্থানীয়দের মধ্যে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে মারামারির ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরবর্তীতে পুনরায় কাজ করতে গেলে সেখানেও বাঁধা আসে। বর্তমানে ঠিকাদারের সাড়ে ৬ টন রড ব্রীজের পাশে পড়ে আছে। তাছাড়া জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য নেওয়া কাঠ লাগাতে দিচ্ছে না একটি মহল। ব্রীজের খালে বাঁধ দেওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তীরা মাটি দিচ্ছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে বরকল ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেছেন, ঠিকাদারকে একাধিকবার অনুরোধ করেও কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে এলাকার মানুষ দারুণ কষ্টে রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। স্থানীয় এড. হামিদুর রশিদ চৌধুরী বলেছেন, বরকল ছালামতিয়া মাদরাসা, বরকল এস জেড উচ্চ বিদ্যালয়, কানাইমাদারী কাদেরিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, মামুন খলিফা (রহ:) জামে মসজিদসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের এ ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ এ ব্রীজটি দুই বছর পূর্বে ভেঙ্গে দিয়ে পুনরায় নির্মাণ না করার কারণে এ সকল শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি দুরারোগ্য রোগীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে জরুরীভাবে ব্রীজটি নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।